ডিএজি রূপাকে দুদকে যেতেই হবে

অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতেই হচ্ছে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপাকে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2020, 01:45 PM
Updated : 3 Dec 2020, 01:45 PM

দুদকের দেওয়া নোটিসের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তার করা রিট আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট।

তবে 'করোনাভাইরাসে আক্রান্ত' হওয়ায় রূপাকে দুদকে হাজির হওয়ার জন্য ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছে আদালত।

বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেয়।

আদালতে রূপার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শফিক আহমেদ, জেড আই খান পান্না, সালাহ উদ্দিন দোলন, সুরাইয়া বেগম ও মাহবুব শফিক। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

পরে দুদকের আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন, “রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। এখন তাকে দুদকে যেতে হবে। তবে তার আইনজীবী বলেছেন তিনি অসুস্থ। এ কারণে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।”

গত ২৮ অক্টোবর দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ডিএজি ররূপাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ নভেম্বর দুদকে হাজির হতে বলা হয়।

সেখানে বলা হয়, রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা ‘বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণ করে জি কে শামীমসহ বিভিন্ন আসামির সাথে আঁতাত করে জামিন করিয়ে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়াসহ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন’ বলে অভিযোগ রয়েছে দুদকের কাছে।

ওই অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ ৪ নভেম্বর দুদকে হাজির হতে বলা হয়েছিল রূপাকে। কিন্তু তিনি ওই চিঠির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। নোটিসের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে সেখানে রুলও চাওয়া হয়।

পরে তার অসুস্থতার কারণে গত ৩ নভেম্বর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে হাই কোর্ট।

ওইদিন হাই কোর্ট দুদককে বলে দেয়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদকে যেতে তাকে যেন ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়।

পরে রূপা দুদকে সময় চেয়ে আবেদন করলে আগামী রোববার পর্যন্ত তাকে সময় দেওয়া হয়। এদিকে বৃহস্পতিবার আবেদনটি ফের আদালতে ওঠে এবং শুনানি শেষে হাই কোর্ট রিট আবেদনটি খারিজ করে দেয়। 

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের মধ্যে গুলশানের নিকেতনে জিকে শামীমের অফিসে অভিযান চালায় র্যাব। শামীমের সঙ্গে তার সাত দেহরক্ষীকেও সেদিন গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে এই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ বেরিয়ে আসতে থাকে। জানা যায়, যুবলীগ নেতা পরিচয়ে শামীম গণপূর্তের সব কাজের দরপত্র বাগিয়ে নিতেন।

গ্রেপ্তারের পরদিন তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় তিনটি মামলা করে র্যাব। পরে দুদকও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে।

এরপর গত ৪ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট থেকে মাদক মামলায় ছয় মাস এবং ৬ ফেব্রুয়ারি অস্ত্র মামলায় এক বছরের জামিন পান শামীম।

সেই জামিনের কাগজপত্র পরের মাসে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছালে বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।

পরে গত ৮ মার্চ অস্ত্র ও মাদকের দুই মামলায় শামীমকে দেওয়া জামিনের আদেশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে প্রত্যাহার (রিকল) করে নেয় হাই কোর্টের দুটি বেঞ্চ।

আদালত সে সময় বলে, ‘নাম বিভ্রাটে’ বুঝতে সমস্যা হয়েছিল যে ওই ব্যক্তি জি কে শামীম।

হাই কোর্টের যে বেঞ্চ থেকে জি কে শামীম মাদক মামলায় জামিন পেয়েছিলেন সেই বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ডিএজি জান্নাতুল ফেরদৌসী রূপা।

আরও পড়ুন