বাংলা একাডেমির ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ৬৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে বাংলা একাডেমি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2020, 12:11 PM
Updated : 3 Dec 2020, 12:11 PM

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও বাংলা একাডেমির পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি এবং সাড়ে ১০টায় বাংলা একাডেমির স্বপ্নদ্রষ্টা মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

বাংলা একাডেমির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল ১১টায় একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে ‘সবার আগে সংস্কৃতি সবার সঙ্গে সংস্কৃতি’ শীর্ষক বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বক্তৃতা-২০২০ দেন রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ।

এই অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে সম্প্রতি প্রয়াত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশিষ্টজনদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

একক বক্তা সৈয়দ মোহাম্মদ শাহেদ বলেন, “সংস্কৃতি আপনি গড়ে উঠে, সংস্কৃতিকে বানানো যায় না। বাঙালির সংস্কৃতি জীবনের সর্বক্ষেত্রে বিস্তৃত অর্থনীতি, রাজনীতি, কূটনীতি, সমাজ, ধর্ম। এর যা কিছু বাঙালি সংস্কৃতির প্রতিকূল, তার স্থান এখানে হবে না।

“পাকিস্তানি শাসনামলে বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের দুই দশকের সংগ্রামকে তাই চিহ্নিত করা যায় ভাষা-আন্দোলন নামক একটি সাংস্কৃতিক সংগ্রামের পরিণতিরূপে। পূর্ববাংলার মানুষ তার সংস্কৃতির কারণেই পাকিস্তানকে মন থেকে গ্রহণ করতে পারেনি; সংস্কৃতিই পূর্ববাংলার মানুষকে ‘পাকিস্তানি’ হতে দেয়নি। ”

স্বাগত বক্তব্যে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, “বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা ও বিকাশের জন্য। ছয় দশকের পরিক্রমায় আমরা এ কথা দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারি যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের সুরক্ষা বিধানের একাডেমিক দায়িত্ব পেরিয়ে বাংলা একাডেমি আজ আক্ষরিক অর্থেই বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের প্রতীক-প্রতিষ্ঠান।”

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, “সংস্কৃতি এক চলমান ও জীবন্ত বিষয়; একে কোনো সংজ্ঞায় আবদ্ধ করা যায় না। গতিময়তাই এর নান্দনিকতা। বাংলা একাডেমি বাঙালির জীবনে সংস্কৃতির সংগ্রামকেই সার্থক করে তুলেছে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যতদিন বাংলাদেশ স্থিত থাকবে, ততোদিনই বাংলা একাডেমি তার প্রকৃতি মহিমায় উজ্জ্বল থাকবে।”

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষ্যে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠিত হয়।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন বর্ধমান হাউজে একাডেমির সদর দপ্তর স্থাপিত হয়। পরে নতুন ভবনে স্থানান্তরিত হয় প্রশাসনিক ভবন। বর্ধমান হাউজে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ভাষা আন্দোলন জাদুঘর।

১৯৫৭ সালের এপ্রিলে গৃহীত ‘দ্য বেঙ্গলি একাডেমি অ্যাক্ট ১৯৫৭’  অনুযায়ী বাংলা একাডেমিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দেওয়া হয়।