পিকে হালদারকে দেশে ফেরাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অনুরোধ করা হলে ইন্টারপোল কিছু তথ্য চেয়েছে, যার মধ্যে আদালতের পরোয়ানা অন্যতম।
আড়াই মাসেও নিম্ন আদালত থেকে সেই পরোয়ানা জারি হয়নি শুনে বুধবার উষ্মা প্রকাশ করে হাই কোর্ট।
এরপর রাতে সেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয় বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এ ইমরুল কায়েশ এই পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর বলেন, “গত ২৬ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আসামি পিকে হালদারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মৌখিকভাবে পরোয়ানার আদেশ দেন। সেই আদেশ প্রস্তুত হওয়ায় আজ তা স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হয়েছে।”
তবে বুধবার হাই কোর্টে দেওয়া দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রেপ্তারি পরোয়ানার জন্য ১৫ সেপ্টেম্বর মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পরোয়ানা জারি হলে পিকে হালদারকে দেশে ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইন্টারপোলকে ফের অনুরোধ করা হবে।
প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার)
আইএলএফএসএল গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে বছরের শুরুতে পি কে হালদারের বিদেশ পালানোর পর দুদক তার ৩০০ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।
বিদেশে থাকা পিকে হালদার গত ২৮ জুন আইএলএফএসএলের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে তার দেশে ফেরার জন্য ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেন।
পরে তার জন্য আদালতের হেফাজত চেয়ে আবেদন করে আইএলএফএসএল। আদালত পিকে হালদার কখন, কবে, কোন ফ্লাইটে দেশে ফিরতে চান তা জানাতে বলে।
কিন্তু ২৪ অক্টোবর আইএলএফএসএল অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও দুদককে জানায়, অসুস্থতার কারণে পি কে হালদার আপাতত দেশে ফিরছেন না।
পি কে হালদার বিদেশ পালানোর পর আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে অপসারণের পাশাপাশি তার সম্পত্তি জব্দ করা হয়।
এর আগে আইএলএফএসএলে রাখা আমানতের টাকা ফেরতের নির্দেশনা চেয়ে সাত ব্যক্তি হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন।
ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাই কোর্ট গত ২১ জানুয়ারি পি কে হালদার, তার মা, স্ত্রী, ভাই এবং ওই কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৯ জনের পাসপোর্ট জব্দের নির্দেশ দেয়।
তাদের দেশত্যাগ ঠেকাতে ওই নির্দেশ দেওয়া হলেও পি কে হালদার ততদিনে লাপাত্তা হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর আসে।
চলতি বছর ৮ জানুয়ারি দুদক অজ্ঞাত সূত্র থেকে প্রায় ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে।