হল-মার্ক ঋণ কেলেঙ্কারি: দুদকের অনুসন্ধান দলে নতুন দুই মুখ

হল-মার্ক গ্রুপের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় নন-ফান্ডেড (যেক্ষেত্রে সরাসরি ঋণগ্রহিতাকে নগদ টাকা দেওয়া হয় না) অংশের অনুসন্ধান দল পুনর্গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2020, 04:30 PM
Updated : 1 Dec 2020, 04:30 PM

দুদক পরিচালক মীর জয়নুল আবদীন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান দলে আরও দুজনকে যুক্ত করা হয়েছে কমিশনার মোজাম্মেল হক খান জানান।

মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হল-মার্ক গ্রুপের নন-ফান্ডেড অংশ অনুসন্ধানের জন্য কমিশনের পরিচালক মীর জয়নুল আবদীন শিবলীর নেতৃত্বে একটি কমিটি পুনর্গঠন করা হয়েছে।

কমিটিতে নতুন করে উপসহকারী পরিচালক সহিদুর রহমান ও আফনান জান্নাত কেয়াকে যুক্ত করা হয়েছে।

আগের সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক এস এম আক্তার হামিদ ভূঁইয়া, মশিউর রহমান ও সেলিনা আক্তার মনি, সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও সিলভিয়া ফেরদৌস।

কমিশনার মোজাম্মেল বলেন, যদিও এটিকে (ঋণ) নন-ফান্ডেড বলা হয়েছে আসলে এর সবটাই ফান্ডেড। যে ৪১টি ব্যাংক এবং ব্যাংকের শাখায় এসব আর্থিক লেনদেন হয়েছে, সেখানে কোনো জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে কিনা, কোনো দুর্নীতি ঘটেছে কিনা, তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এই অনুসন্ধান কমিটি।

“এই কমিটি কমিশনে যে প্রতিবেদন দাখিল করবে, সেই প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

কমিশন থেকে হল-মার্ক গ্রুপের নন-ফান্ডেড ঋণ কেলেঙ্কারি নিয়ে গত বছর একটি মামলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

২০১০ সাল থেকে ২০১২ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা কার্যালয় সহ একাধিক কার্যালয় থেকে অবৈধভাবে ৩ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা সরানোর অভিযোগ রয়েছে হল-মার্ক গ্রুপ, নকশি নিট কম্পোজিট, খান জাহান আলী স্যুয়েটার্স এবং ডিএন স্পোর্টস সহ ছয়টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে হল-মার্ক গ্রুপ একাই সরিয়েছে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা।

এ বিষয়ে তখন গণমাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে আমলে নেয় দুদক। এরপর সোনালী ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুরোধে এই অর্থ কারসাজির প্রাথমিক অনুসন্ধান কাজ শুরু করে কমিশন। দুদকের উপ-পরিচালক মীর জয়নুল আবেদিন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি বিশেষ দল অনুসন্ধান করে।

এর মধ্যে প্রথমে ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৪৯ লাখ ৩৪ হাজার ৮৭৭ টাকা আত্মাতের অভিযোগে ২১ জনকে আসামি করে ১১টি মামলা করা হয়। এসব মামলার তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর ২১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।

এর আগে হল-মার্কের সহযোগী বিভিন্ন কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে আরও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কমিশন ৩৫ জনকে আসামি করে আরও ২৭টি মামলা করে। পরে মামলাগুলো তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়েছে।

একই সময়ে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসির মাধ্যমে কোনো মালামাল আমদানি-রপ্তানি না হওয়া সত্ত্বেও ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে সোনালী ব্যাংক থেকে নন-ফান্ডেড প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক।