করোনাভাইরাসে ইতিহাসবিদ রতন লাল চক্রবর্তীর মৃত্যু

করোনাভাইরাস কেড়ে নিল ইতিহাসবিদ রতন লাল চক্রবর্তীর প্রাণ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2020, 12:09 PM
Updated : 1 Dec 2020, 12:28 PM

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত এই অধ্যাপক তার আগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও শিক্ষকতা করেছিলেন।

সোমবার রাতে ঢাকার পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রতন লালের মৃত্যু হয় বলে তার জামাতা আব্দুল মালেক জানিয়েছেন।

ডায়াবেটিস ও কিডনিতে সমস্যাসহ নানা জটিলতায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ৭ নভেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

সেখানে অধ্যাপক রতন লালসহ তার পরিবারের সদস্যদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করালে সবার
সংক্রমণ ধরা পড়ে।

অবস্থার অবনতি ঘটায় অধ্যাপক রতন লালকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছিল।
মঙ্গলবার ঢাকার পোস্তগোলা মহাশশ্মানে অধ্যাপক রতন লালের মরদেহ সৎকার করা হয়েছে বলে জানান আব্দুল মালেক।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের পরিবারের সবারই কোভিড পজিটিভ হয়েছিল। আমরা মাত্র সেরে ওঠেছি। তাই এই অবস্থায় উনাকে আর দেশের বাড়ি পটুয়াখালীতে নেওয়া হয়নি।”

রতন লালের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। তার একমাত্র মেয়ে লোপামুদ্রা মালেক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক।

রতন লাল চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৫১ সালে পটুয়াখালী জেলায়। পিতা প্রয়াত সুরেশ চন্দ্র চক্রবর্তীর পদাঙ্ক অনুসরণ করে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেন তিনি।

অধ্যাপক রতন লাল চক্রবর্তীর লেখা 'বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়', 'দি ব্লাক আগস্ট অব ১৯৭৫', 'রাজরোষ'সহ তার সম্পাদিত গবেষণামূলক বইয়ের সংখ্যা অন্তত ৩৫টি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে প্রকাশিতব্য 'হিস্ট্রি অব ঢাকা ইউনিভার্সিটি' গ্রন্থের সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি।
অধ্যাপক রতন লাল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান শোক প্রকাশ করেছেন।

এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “অধ্যাপক ড. রতন লাল চক্রবর্তী ছিলেন একজন স্বনামধন্য ইতিহাসবিদ ও গবেষক। তিনি ইতিহাস বিষয়ে মৌলিক গ্রন্থসহ বহু গ্রন্থ রচনা করেছেন।

“তিনি ছিলেন প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন একজন অসাধারণ গুণী ব্যক্তি। বাংলাদেশে ইতিহাস চর্চা, প্রসার ও গবেষণায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।”