বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার উল আলম গুরুতর অসুস্থ

বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক সচিব, রাষ্ট্রদূত আনোয়ার উল আলম শহীদ গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Nov 2020, 08:04 PM
Updated : 26 Nov 2020, 08:04 PM

তার পরিবারের বরাত দিয়ে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, “গত ১ নভেম্বর মস্তিষ্কে টিউমার অপসারণের পর এমনিতে তিনি সুস্থ হতে পারেননি। পরে তার শরীরে আবার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল।

“ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে তাকে। আজকেও তার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তার উন্নতির মাত্রা খুব ধীর। অবস্থা খুব ভালো নয়।”

আনোয়ার উল আলম সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহসভাপতি।

আনোয়ার উল আলম ১৯৪৭ সালে টাঙ্গাইলের থানাপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৌলভী আবদুর রাহীম ইছাপুরী ছিলেন ইসলামী পণ্ডিত ও টাঙ্গাইলে ব্রিটিশ-বিরোধী রাজনৈতিক মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম নেতা।

আনোয়ার উল আলম ১৯৬২ সাল থেকে ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং একই সঙ্গে বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে থাকেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) টাঙ্গাইল জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন তিনি।

১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনে সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আনোয়ারুল আলম শহীদ। এসময় বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় নেতাদের সঙ্গে তার পরিচয় গড়ে উঠে।

আবদুল কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা কাদেরিয়া বাহিনীর বেসামরিক প্রধান ছিলেন আনোয়ার উল আলম।

মুক্তিবাহিনীর একটি সাপ্তাহিক মুখপাত্র ‘রণাঙ্গন’ প্রকাশনা শুরু হলে ‘রণদূত’ ছদ্মনামে আনোয়ার উল আলম শহীদ এই পত্রিকা সম্পাদনা করতেন।

মুক্তিযুদ্ধের পর সাবেক ইপিআর ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হলে তাকে সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে তিনি রক্ষীবাহিনীর সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান।

রক্ষীবাহিনী বিলুপ্ত হওয়ার পর তিনি সেনাবাহিনীতে ফিরে যান। কর্নেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর ১৯৭৮ সালে সরকার তাকে অবসর দিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

পরে আনোয়ার উল আলম জাকার্তায় বাংলাদেশ দূতাবাসে ফার্স্ট সেক্রেটারি ছিলেন। জাকার্তা থেকে বদলি হয়ে যান কুয়ালালামপুরে, পরে ব্রুনাই, হংকংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসেও চাকরি করেন তিনি। শেষে সচিব মর্যাদায় বাহরাইন ও স্পেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হন তিনি।

আনোয়ার উল আলম ২০০৬ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। পরে তিনি টাঙ্গাইল পৈতৃক ভিটায় ‘শহীদ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর’গড়ে তোলেন।