আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ উপলক্ষে বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্যাতন প্রতিরোধে আইন থাকলেও ‘খুব কম’ দোষীদের সাজা হয়।
“সরকারের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে নির্যাতিত হয়ে যারা আসেন, এর ৯৯ শতাংশ ঘটনার ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা যায়নি। যা আইনের কার্যকর প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে খুবই উদ্বেগজনক একটি চিত্র।”
অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে ধর্ষণের মতো অপরাধ প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে টিআইবির পর্যবেক্ষণ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, অস্বচ্ছলতা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাংশের অদক্ষতা, অবহেলা ও পক্ষপাতিত্ব, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা, নিরাপত্তাহীনতা এবং সম্পদ ও ক্ষমতার যোগসাজশসহ করোনাভাইরাস সংকটের কারণে নারী ও কন্যা শিশু নির্যাতনের ঘটনা ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “মহামারী স্বাস্থ্য সংকটের পাশাপাশি নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতাকেও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ধর্ষণের মতো পাশবিক অপরাধের ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিতের অভাবে ক্রমান্বয়ে তা মহামারির মতোই ছড়িয়ে পড়ছে।”
উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশের কারণে বর্তমানে প্রায় দেড় হাজার মামলার বিচার কার্যক্রম আটকে আছে বলে জানান তিনি।
“বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করার মাধ্যমে বিচারহীনতার ঝুঁকি সৃষ্টি করা হচ্ছে। দুঃখজনকভাবে এক ধরনের ধারণার জন্ম হয়েছে যে, সময়ক্ষেপণের মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘ করতে পারলে নতুন কোনো ঘটনার ডামাডোলে মানুষ এক সময় ভুলে যাবে এবং শাস্তি এড়ানো সম্ভব হবে।”
তিনি বলেন, “ঢাকার কুর্মিটোলার ঘটনায় বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হলেও বনানীর রেইনট্রি হোটেলের ঘটনা আলোচনা থেকে হারিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর বিচার প্রক্রিয়া নিয়েই এখন সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
“আপাতদৃষ্টিতে একটি বীভৎস ঘটনা আরেকটি বীভৎস ঘটনার আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে। বিচারহীনতার এই সংস্কৃতিতে দুর্বৃত্তরা উৎসাহ পাচ্ছে।”
সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি নারীর প্রতি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর তাগিদ দিয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারকেও সব ধরনের সুরক্ষা ও সহায়তা দেওয়ার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।