রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নতুন প্রতিমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন।
গত পাঁচ মাস ধরে খালি থাকা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে যে ফরিদুল হক খান দুলালই আসছেন, সেই গুঞ্জন সোমবার থেকেই ছিল। তবে সরকারের তরফ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তখন কিছু বলা হয়নি।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের ভালো একজন লোক, জামালপুরের ইসলামপুরের সংসদ সদস্য, তিনি আজকে সন্ধ্যায় শপথ নেবেন।”
সন্ধ্যা ৭টায় রাষ্ট্রপতি নবনিযুক্ত প্রতিমন্ত্রীকে শপথ পড়াবেন বলে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে টানা তৃতীয় মেয়াদে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রীকে নিয়ে নতুন সরকারের মন্ত্রিসভা সাজান তিনি।
মন্ত্রিসভায় দুই দফা রদবদল এবং একজন প্রতিমন্ত্রী মারা যাওয়ার পর শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকারে বর্তমানে ২৫ জন মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী এবং তিনজন উপমন্ত্রী রয়েছেন।
সর্বশেষ গত বছরের ১৩ জুলাই প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা ইমরান আহমদ মন্ত্রী হিসেবে এবং ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা প্রতিমন্ত্রীর শপথ নেন।
টেকনোক্র্যাট কোটায় অর্থাৎ, সংসদ সদস্য না হলেও মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ৭৪ বছর বয়সী আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মো. আবদুল্লাহ ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। গত ১৩ জুন তার মৃত্যুর এ মন্ত্রণালয় খালিই ছিল।
রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, কোনো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী না থাকলে সেই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী অধীনে চলে যায়। এখন ধর্মের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী তুলে দিচ্ছেন মো. ফরিদুল হক খান দুলালের হাতে।
৬৪ বছর বয়সী দুলাল জামালপুর-২ (ইসলামপুর) আসন থেকে এ নিয়ে তৃতীয়বার সংসদে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
জামালপুরের ইসলামপুরের সাবেক এই উপজেলা চেয়ারম্যান ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রথবার সংসদে যান। সেই সংসদে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য করা হয় তাকে।
দুই কন্যা সন্তানের জনক দুলাল মূলত পাট ব্যবসায়ী। বর্তমান একাদশ সংসদে তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন।
ধর্ম ছাড়া আর কোনো মন্ত্রণালয়ে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না, সে বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সাংবাদিকরা।
উত্তরে তিনি বলেন, “এ মুহূর্তে মন্ত্রিসভায় অন্য কোনো পরিবর্তনের কোনো বিষয় আমি জানি না। কারণ (পরিবর্তন) করলে আরও কয়েকজনকে নিয়ে হয়ত করত। কিন্তু এটা আসলে পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার।
“তিনি এখন এই মুহূর্তে আর কোনো পরিবর্তন… ওটা (শ্রম মন্ত্রণালয়) যেহেতু খালি, শূন্য পদটা পূরণ করছেন। অন্য কোনো জায়গায় ঠিক এ সময় পরিবর্তনটা তাড়াতাড়ি হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না। খুব সহসা পরিবর্তন হচ্ছে না।”
‘খুব সহসা’ বলতে কোন সময়কে বোঝানো হচ্ছে, এমন জিজ্ঞাসায় কাদের বলেন, “এই যে করোনাকালে। … স্বাভাবিক সময়ে কাজ করা হয় ফিজিক্যাল প্রেজেন্স দিয়ে… এ সময় খুব কঠিন। আর তাছাড়া এ মুহূর্তে অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে জরুরি ভিত্তিতে কোনো পরিবর্তনের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন না যে এ সময় করা দরকার।”