মাস্ক নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে যা দেখা গেল
মাসুম বিল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 23 Nov 2020 11:09 PM BdST Updated: 24 Nov 2020 07:36 PM BdST
-
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ঘরের বাইরে সবার মাস্ক পরা নিশ্চিতে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসছে; মুখে মাস্ক না থাকলে দেওয়া হচ্ছে জেল-জরিমানা। সোমবার মৎস্য ভবন এলাকার ছবি।
-
-
-
-
-
কারও বাসা থেকে মাস্ক আনতে মনে নেই, কারও তা পরলে দম বন্ধ লাগে; আবার কেউ কেউ মাস্ক নিয়ে বের হলেও ‘পড়ে গেছে’ পথে- এমনই নানা অজুহাতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের এই উপকরণ পরছেন না বহু মানুষ।
মাস্ক মুখে না জড়িয়ে যারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মুখোমুখি হয়েছেন, তাদের অনেককে গুণতে হয়েছে নগদ জরিমানা, সঙ্গে পেয়েছেন বিনামূল্যের মাস্কও।
সোমবার ঢাকা জেলা প্রশাসনের একটি ভ্রাম্যমাণ আদালতের এক ঘণ্টার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে পাওয়া যায় এমন চিত্র।
জেল-জরিমানায় সীমাবদ্ধ না থেকে নিম্ন আয়ের মানুষদের হাতে বিনামূল্যের মাস্কও তুলে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস মহামারীর ’দ্বিতীয় ঢেউ’ সামলানোর পদক্ষেপের অংশ হিসাবে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার।

সোমবার বেলা পৌনে ১টার দিকে রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে চলছিল সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন হকের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
শুরুতে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবককে থামিয়ে মাস্ক না থাকায় ২০০ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে দুই দিনের কারাবাসের সাজা দেন তিনি।
‘মাস্ক আনতে মনে নেই’ বলে ম্যাজিস্ট্রেটকে জানান বাসাবো থেকে আসা একজন যুবক; অন্যজন অজুহাত না দেখিয়ে সাজা মেনে নেন।
জরিমানা পরিশোধ করলে মাস্ক পরার জন্য উৎসাহিত করে ছাড়ার পাশাপাশি তাদেরকে দেওয়া হয় দুটি মাস্ক।

একটি বাস থামিয়ে মাস্কবিহীন যাত্রীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চালালেও কাউকে পাননি ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যরা। আদালতের উপস্থিতি টের পাওয়া যাত্রীদের দুয়েকজনকে মাস্ক হাত থেকে দ্রুত মুখে জড়িয়ে নিতে দেখা গেছে।
এরপর রিকশা আরোহী তিন নারীকে মাস্কবিহীন অবস্থায় পান ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন হক; মাস্ক পরা থাকায় রিকশাচালককে বিদায় করে দেন তিনি।
ওই নারীদের একজন আদালতের মুখোমুখি হয়ে ব্যাগ থেকে মাস্ক বের করে পরলেও অন্য দুই জনের সেই ব্যবস্থা ছিল না। ম্যাজিস্ট্রেটের জিজ্ঞাসাবাদে মাস্ক না পরার কোনো কারণ বলতে পারেননি তাদের কেউই।
তাদের উদ্দেশে ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন এ সময় বলেন, “আপনারা যদি মাস্ক না পরেন, আমরা মামলা দিয়ে, জরিমানা করে কিছু করতে পারব না। দয়া করে মাস্ক পরবেন।”

এরমধ্যে মাস্কবিহীন কয়েক রিকশাচালককে বিনামূল্যে মাস্ক দেওয়ার পর আরেক রিকশায় আসা দুই যুবককে থামানো হয়।
তাদের একজনকে ৩০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে চার দিনের জেল দেন ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় নগদ টাকা সঙ্গে না থাকার কথা জানান ওই দুই যুবক।
তখন তাদের একজনকে বিকাশ এজেন্টের দোকানে পাঠানো হয় কারও থেকে জরিমানার টাকার ব্যবস্থা করতে, সঙ্গে পাঠানো হয় একজন আনসার সদস্যকে। এরপর বিকাশের মাধ্যমে টাকা এনে জরিমানা পরিশোধ করলে বিনামূল্যের মাস্ক পরিয়ে তাদেরকে ছাড়া হয়।
মাস্ক না পরার কারণ জানতে চাইলে ওই যুবকদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনে ছিল না অ্যাকচুয়ালি। নেক্সট টাইম থেকে আর এমন হবে না। আমাদের ৩০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে, পরিবারের জন্য, নিজের যেন আমরা মাস্ক পরি।”

শুরুতে পূবালী ব্যাংকের সামনে এক ব্যক্তিকে মাস্ক পরা না থাকায় এবং পাবলিক প্লেসে ধুমপানের অপরাধে ২০০ টাকা জরিমানা করেন ম্যাজিস্ট্রেট।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ভবনের নিচতলায় ফার্মেসিগুলোর দিকে যান ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। ওই সময় সেখানে মাস্কবিহীন কাউকে পাননি তারা।
তবে রাস্তা দিয়ে যাওয়া কয়েকজন মাস্কবিহীন রিকশাচালককে থামিয়ে মাস্ক হাতে তুলে দেন পুলিশ সদস্য ও জেলা প্রশাসনের কর্মীরা।
এ সময় ‘মাস্ক পরেননি কেন’, জানতে চাইলে রিকশাচালক ষাটোর্ধ্ব নুরু মিয়া ম্যাজিস্ট্রেটকে বলেন, “আমার একটা মাস্ক ছিল, রাস্তায় পড়ে গেছে।”
বেলা পৌনে ২টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে শাহবাগ এলাকার ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম শেষ করেন ম্যাজিস্ট্রেট আফরিন হক।
তিনি বলেন, “মাস্কের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে আমরা এই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছি। জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি মাস্কও বিতরণ করা হচ্ছে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা এবং অন্যান্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় এখন দুয়েকজন ছাড়া বাকিরা মাস্ক পরছেন বলে পর্যবেক্ষণ এই ম্যাজিস্ট্রেটের।
আফরিন হক বলেন, “আমূল পরিবর্তন আসছে। শুরুর দিকে আমরা দেখেছি, বেশিরভাগের মাস্ক ছিল না, এখন মোটামুটি বেশিরভাগই মাস্ক পরছে।
“হয়ত কেউ কেউ সঠিক জায়গায় পরছে না। দুয়েকজন রিকশাওয়ালা ভাই ও নিম্ন আয়ের মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যাচ্ছে না। তাদেরকে বুঝিয়ে আমরা বিনামূল্যে মাস্ক দিয়ে দিচ্ছি।”
এদিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, শাহবাগ এলাকা ছাড়াও ঢাকা জেলার পাঁচটি উপজেলা এবং মহানগরের জজ কোর্ট, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী বাস টার্মিনাল, সচিবালয়, গুলিস্তান, ধানমণ্ডি, ওয়ারি, গাউছিয়া মার্কেটসহ মোট ১০টি স্পটে সোমবার ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
এসব আদালতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ৯৩টি মামলায় ৯৬ জন ব্যক্তিকে মোট ২০ হাজার ৪০০ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
একইসঙ্গে মাস্ক ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি ও মাইকিংয়ের পাশাপাশি গরিব ও অভাবী লোকদের মধ্যে মোট ১ হাজার ৪০০ মাস্ক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।
-
উপহার হিসেবেও টিকা পাঠাবে ভারত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
-
পৌর ভোট: চতুর্থ ধাপে ৩২৯০ জনের মনোনয়নপত্র জমা
-
ওটিটি নীতিমালার খসড়া তৈরির নির্দেশ
-
ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় দম্পতির মৃত্যু
-
সুনাম ক্ষুণ্ন করতে সহিংসতা করে: ইসি সচিব
-
করোনাভাইরাস: জাতীয় কবিতা উৎসব স্থগিত
-
দীপন হত্যা: বহিষ্কৃত মেজর জিয়াসহ ৮ আসামির সর্বোচ্চ সাজা চায় রাষ্ট্রপক্ষ
-
খসড়া প্রকাশ: ভোটার তালিকায় যুক্ত হচ্ছে ১৫ লাখ নাম
-
পৌর ভোট: চতুর্থ ধাপে ৩২৯০ জনের মনোনয়নপত্র জমা
-
উপহার হিসেবেও টিকা পাঠাবে ভারত: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
-
তিন মাসের মধ্যে ওটিটি নীতিমালার খসড়া তৈরির নির্দেশ
-
ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় দম্পতির মৃত্যু
-
ধর্ষণের মামলায় গাফিলতি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন-এসপিকে আদালতে তলব
-
বাহরাইনে ফিরতে ইচ্ছুক প্রবাসীদের নিবন্ধন করার আহ্বান
সর্বাধিক পঠিত
- শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে বার্সাকে হারিয়ে বিলবাওয়ের উৎসব
- তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তামিমের ডেপুটি
- ইউভেন্তুসকে উড়িয়ে দিল ইন্টার
- তামিম-সাকিবদের জার্সিতে স্বাধীনতার স্মারক
- সিদ্ধান্তের ভার মেসির ওপর ছাড়লেন কোচ
- দলবেঁধে ধর্ষণ করিয়েছে স্বামী, অভিযোগ নারীর
- ১২ মাসের বেতন না দিলে পরিষদ বাতিল: তাজুল
- ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে দুর্ঘটনায় দম্পতির মৃত্যু
- করোনাভাইরাস: সাড়ে আট মাসের সর্বনিম্ন রোগী শনাক্ত
- নোয়াখালীতে ফের গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের মামলা