সাওদা হত্যা: রাসেলের সাজা কমে যাবজ্জীবন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাওদা হত্যা মামলায় জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামি রাসেল মিয়ার সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Nov 2020, 08:34 AM
Updated : 23 Nov 2020, 08:34 AM

ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদন) ও আসামির আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি এএসএম আব্দুল মোবিনের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় দেয়।

যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি আসামি রাসেলকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে।

আদালতে রাসেলের পক্ষে শুনানি করেন খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী শিশির মোহাম্মদ মনির, এম মাসুদ রানা ও নওয়াব আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহীন আহমেদ খান।

শিশির মনির পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনটি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে হাই কোর্ট সাজা কমিয়েছে।

“ঘটনার সময় আসামির বয়স ছিল ২০ বছর। তার মানসিক অস্থিরতা এবং এ ঘটনার আগে কোনো অপরাধের রেকর্ড না থাকার বিষয়টিও বিবেচনায় আনা হয়েছে। তাছাড়া গত পাঁচ বছর ধরে তিনি কনডেম সেলে আছেন।”

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সাওদা বেগমকে হত্যার দায়ে ২০১৫ সালের ১ জুন রাসেল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন বরিশালের জেলা ও দায়রা জজ মো. আনোয়ারুল হক।

মৃত্যুদণ্ডাদেশের সঙ্গে আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয় জজ আদালতের রায়ে।

ওই রায়ের পর খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন রাসেল মিয়া। এর মধ্যে বিচারিক আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের আবেদনও (ডেথ রেফারেন্স) হাই কোর্টে আসে। 

সেই আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে সোমবার হাই কোর্ট রায় দিল।

বরগুনার পাথরঘাটার হারুন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন।

সাওদা বেগম ছিলেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্রী, ফাইল ছবি

আর সাওদা (২২) ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার আব্দুল রাজ্জাকের মেয়ে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রেমের সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর সাওদাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাসেল মিয়া।

স্থানীয়রা রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণীকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়। ওইদিনই বিকালে ঢাকায় মারা যান সাওদা।

এ ঘটনায় ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর রাতে সাওদার মা সাহিদা বেগম বরিশাল কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এজাহারে রাসেল মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়।

ঘটনার এক সপ্তাহ পর চট্টগ্রামের বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকা থেকে রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাসেলের ছাত্রত্ব বাতিল করে।

এরপর ২০১৪ সালের ৩০ এপ্রিল রাসেলের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। মামলায় ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে রায় ঘোষণা করে জজ আদালত।