তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে আইন সংশোধনের পরামর্শ

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন করতে হলে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রয়োজন বলে মত এসেছে একটি কর্মশালা থেকে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Nov 2020, 08:22 PM
Updated : 19 Nov 2020, 08:22 PM

ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তসহ ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরে কর্মশালায় বলা হয়েছে, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জন করতে হলে এখন থেকেই তামাকের ব্যবহার কমানোর জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন আইন সংশোধনের।

ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের (সিটিএফকে) সহায়তায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিএমএ ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সাংবাদিক কর্মশালার আয়োজন করে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রগতির জন্য জ্ঞান- প্রজ্ঞা এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া অ্যালায়েন্স-আত্মা।

কর্মশালায় প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত ২৩ জন সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।

কর্মশালায় বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস এবং প্রজ্ঞার তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক প্রকল্প প্রধান হাসান শাহরিয়ার।

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তুলে ধরেন সিটিএফকের বাংলাদেশ টিমের গ্রান্টস ম্যানেজার এম এ সালাম এবং প্রোগ্রাম অফিসার আতাউর রহমান। কর্মশালায় গণমাধ্যমের করণীয় অংশে আলোচক হিসেবে অংশ নেন বাংলাদেশ প্রতিদিন প্রত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আবু তাহের, আত্মার কনভেনর লিটন হায়দার, কো-কনভেনর নাদিরা কিরণ ও মিজান চৌধুরী এবং প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের।

কর্মশালায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন বিষয়ে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। প্রস্তাবগুলো হল, ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্তসহ সকল পাবলিক প্লেস কর্মক্ষেত্র ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপান নিষিদ্ধ করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি বা সিএসআর কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকপণ্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটসহ সকল ভ্যাপিং এবং হিটেড তামাকপণ্যের বিক্রয় ও আমদানি নিষিদ্ধ করা এবং প্যাকেটে/মোড়কে সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবাণীর আকার ৫০ভাগ থেকে ৯০ভাগে বৃদ্ধিসহ তামাকজাত দ্রব্য মোড়কজাতকরণে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা।

কর্মশালায় আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে রূহুল কুদ্দুস বলেন, “তামাক ব্যবহার কমানোর বর্তমান যে গতি রয়েছে তা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে যথেষ্ট নয়। তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে এফসিটিসি আলোকে শক্তিশালী তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কোনো বিকল্প নাই।”

উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকরা তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিদ্যমান আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। একই সাথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন হলে ২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগজনিত অকাল মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে কমিয়ে আনার মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে কর্মশালায় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।