ঢাকায় ২২ কোম্পানির মাধ্যমে বাস চালানোর ভাবনা

যানজট নিরসন এবং গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে রাজধানীর ৪২টি রুটে ২২ কোম্পানির মাধ্যমে বাস চালানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Nov 2020, 11:38 AM
Updated : 10 Nov 2020, 11:38 AM

মঙ্গলবার দক্ষিণের নগর ভবনে বাস রুট র‌্যাশনালাইজেশন বিষয়ে গঠিত কমিটির ত্রয়োদশ বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মেয়র বলেন, “আজকে বৈঠকে একটি প্রতিবেদন পেশ করেছেন প্রতিনিধিবৃন্দ। সেই প্রতিবেদন আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে আলোচনা করেছি। ঢাকায় বাস চলাচলের ২৯১টি রুট রয়েছে, সেখানে প্রাথমিকভাবে আলোচনা করে আমরা রুট কমিয়ে ৪২টি করার চিন্তা করেছি।

“সেই ৪২টি রুটে ২৫০০ মালিকের বাস পরিচালিত হচ্ছে। সেখানে আমরা ২২টি কোম্পানি দিয়ে পরিচালনা করব। এই ২২টি কোম্পানির মাধ্যমে আমাদের বাস রুটগুলো পরিচালিত হবে।”

এর আগে আনিসুল হক যখন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ছিলেন, সে সময় তিনি ঢাকার গণপরিবহন সঙ্কট লাঘবে বিদেশ থেকে চার হাজার বাস এনে সেগুলো সাতটি আলাদা কোম্পানির হাতে ছেড়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। তবে তার মৃত্যুর পর বিষয়টি আর এগোয়নি।

মঙ্গলবারের সভার পর মেয়র তাপস বলেন, নতুন ব্যবস্থা চালু হলে ঢাকার বাইরে থেকে কোনো গণপরিবহনকে ঢাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।

“এখন যেমন অন্যান্য শহর থেকে বাসগুলো ঢাকায় ঢুকছে… গাজীপুর থেকে বাসগুলো মতিঝিল পর্যন্ত আসছে অথবা নারায়ণঞ্জ থেকে বাসগুলো চলে যাচ্ছে গাবতলী পর্যন্ত। এই পুরো বিষয়টাকে আমরা সমন্বয় করব, যাতে বাইরে থেকে যে বাসে করে যাত্রীরা ঢাকায় আসছেন, তারা ঢাকার সীমানা সংলগ্ন কোনো একটি বাস টার্মিনালে নামেন।… সেখান থেকে অন্য বাসে করে গন্তব্যে পৌঁছাবেন।”

মেয়র বলছেন, এ ব্যবস্থা করা হলে ঢাকার ওপর চাপ ‘অনেক কমে যাবে’। আগামী ৮ ডিসেম্বর কমিটির পরবর্তী বৈঠক বসবে। তার আগে অংশীজনদের সঙ্গেও এসব বিষয়ে আলোচনা হবে।

“তারা আরও বিশ্লেষণ করবেন। তারা ক্লাস্টার ও রুটগুলো নির্দিষ্ট করবেন। এটা করতে পারলে আমরা মনে করি একটি বড় ধাপ আমরা শেষ করব।”

তাপস বলেন, এখন রাজধানীতে মাত্র তিনটি বাস টার্মিনাল আছে। এর মধ্যে দুটি উত্তরে, একটি দক্ষিণে। বাকি বাসগুলো রাস্তায় রাখা হয়। তাতে যানজট হয়।

এসব বিষয় অলোচনায় ঢাকায় বাস রাখার জন্য প্রাথমিকভাবে দশটি টার্মিনাল করার প্রস্তাব এসেছে বলে জানান তিনি। 

“আমরা আরেকটি প্রতিবেদন চেয়েছি। আগামী মার্চের মধ্যেই এটি সম্পন্ন করতে হবে। প্রাথমিকভাবে তারা দশটি টার্মিনালের কথা বলেছে। কোন কোন জায়গায় হতে পারে, এটা সকলে মিলে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন জমা দেবে। আমরা আগামী জানুয়ারির মধ্যে টার্মিনাল নিয়ে একটা প্রস্তাব দিতে পারব বলে মনে করি।”

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ এস এম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এবং ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।