বিনিয়োগ কোটায় বিদেশি নাগরিক হওয়া বাংলাদেশিদের তথ্য চায় দুদক

বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে ‘বিনিয়োগ কোটায়’ বিদেশি নাগরিক হওয়া বাংলাদেশিদের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে তথ্য চেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2020, 06:09 PM
Updated : 1 Nov 2020, 06:09 PM

সম্প্রতি পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে দুদক কমিশনের মহাপরিচালক (অর্থপাচার) আ ন ম আল ফিরোজ এক চিঠিতে এসব তথ্য চেয়েছেন দুদকের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, চিঠিতে বাংলাদেশি নাগরিকদের একটি অংশ অর্থ পাচার করে বিদেশে বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। একই সাথে আলোচিত পানামা পেপার্স, প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে বেশ কিছু বাংলাদেশির নাম উঠে এসেছে সেই কথাও তাতে বলা হয়।

‘বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের তালিকা সংগ্রহ প্রসঙ্গে’ শিরোনামের ওই চিঠিতে বলা হয়, “আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মিস-ইনভয়েসিং, হুন্ডি, বাংক ক্যাশ ট্রান্সফারের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে। এর ফলে দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।”

এতে আরও বলা হয়, “বাংলাদেশের নাগরিকদের একাংশ অর্থপাচার করে বিনিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে। বহুল আলোচিত পানামা পেপার্স, প্যারাডাইস পেপার্স ইত্যাদি কেলেঙ্কারিতে বিভিন্ন বাংলাদেশি নাগরিকের নামও উঠে এসেছে। এই ধারা বন্ধ না হলে অর্থনৈতিক গতি ভবিষ্যতে থমকে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।”

অর্থপাচারের মাধ্যমে বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ রোধ এবং সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের মাধ‌্যমে সম্পদ দেশে ফিরিয়ে আনার বিকল্প নেই উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, “এটি একদিকে অপরাধীদের সাজা নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে দেশীয় সম্পদ ফেরত আনার পাশাপাশি অন্যান্যদের জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে, যা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করবে।”

আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পাশাপাশি রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া এই কাজ সম্পন্ন সম্ভব নয় বলে মনে করে দুদকের চিঠিতে বলা হয়, “দুর্নীতি দমন বিষয়ক আন্তর্জাতিক সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”

বিদেশে নাগরিকত্ব পাওয়া অর্থ পাচারকারীদের তথ্য কীভাবে সংগ্রহ করা যেতে পারে সেই বিষয়ে একটি সুপারিশ তুলে ধরা হয় চিঠিতে।

“পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রাথমিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশে পাচারকৃত সম্পদ বিনিয়োগের মাধ্যমে নাগরিকত্ব গ্রহণকারী বাংলাদেশিদের তথ্য কূটনৈতিক চ্যানেলে সংগ্রহ করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে সরবরাহ করলে কমিশন দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হতে পারবে।”

এই চিঠির বিষয়ে বক্তব্য জানতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও দুদকের মহাপরিচালক আ ন ম আল ফিরোজকে একাধিকবার ফোন দিলেও তারা ধরেননি।