বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে সরকারি প্রতিষ্ঠান কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ড্রেজিং কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি আ স ম ফিরোজ সাংবাদিকদের বলেন, “ড্রেজিং কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নেই বলে কমিটি মনে করে। এটা একটা শুভঙ্করের ফাঁকি। কমিটি বলেছে, নদী খননের পর সরকারি জমি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি লিজ নিয়ে বালি রাখা হোক। তাহলে কত পরিমাণ বালি তোলা হয়েছে তা জানা যাবে।”
সাবেক প্রধান হুইপ ফিরোজ বলেন, “হাজার হাজার কোটি টাকার নদী খনন হয়, কিন্তু এসবের কিছুই দৃশ্যমান নয়। এখন আরিচা, গোয়ালন্দ, মাওয়া ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ফেরিঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। অথচ তারা বলেছে ড্রেজিং করেছে। তাই এ ব্যাপারে কমিটি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চেয়েছে।”
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ কী করছে, সে বিষয়ে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছে সংসদীয় কমিটি। ড্রেজার কেনায় স্বচ্ছতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে বৈঠকে।
বিআডব্লিইউটিএ কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে ফিরোজ বলেন, “সংসদীয় কমিটি বলেছে, নদী ড্রেজিংয়ের ব্যাপারে দুদক আপনাদের তলব করলে আপনাদের মান ইজ্জত থাকবে না। এখন হয়তো জনবলের অভাবের কারণে দুদক আপনাদের তলব করছে না। কিন্তু তলব করলে মান-ইজ্জত থাকবে?”
সংসদ সচিবালয়ের একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে নৌপথকে সচল রাখতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে তোলা পলিমাটি/বালি ফের নদীতে না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে রাখা এবং নদী ভাঙ্গন রোধে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করা হয়েছে কমিটির বৈঠকে।
এছাড়া নৌপথে যাত্রীদের ভোগান্তি কমাতে নৌ টার্মিনালে প্রবেশে টিকিটের অনিয়ম ও চাঁদাবাজি বন্ধের সুপারিশ করেছে কমিটি।
নদী খনন, নদী দূষণ ও দখল রোধসহ সব কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে সমন্বয়ের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে কমিটির বৈঠকে।
এছাড়া দখল ও দূষণ রোধে দায়ী ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো চিহ্নিত করে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে।
আ স ম ফিরোজের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, মো. মাহবুব উল আলম হানিফ, মির্জা আজম এবং মুহিবুর রহমান মানিক অংশ নেন।