ওই জমির দখলদারদের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চাইতে অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতের কাছে গেলেও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। এর মধ্যে বার বার দখল উচ্ছেদের চেষ্টা করেও ব্যর্থ অগ্রণী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মোক্ষম সময়কে কাজে লাগিয়ে মৌলভীবাজার কর্পোরেট শাখার জায়গাটি দখলে নিয়েছেন।
সোমবার নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম গ্রেপ্তার হন। বাড়িতে তল্লাশি করে মদ ও ওয়াকিটকি পায় র্যাব। কিন্তু হাজী সেলিম ও তার স্ত্রীকে পাওয়া যায়নি।
এর মধ্যেই অগ্রণী ব্যাংকের শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী মহাব্যবস্থাপক বৈষ্ণব দাস মণ্ডল লোকজন নিয়ে এসে সেই জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে থাকা জরাজীর্ণ পুরনো ভবন ভেঙে ফেলেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এই জায়গাটি মূলত আমাদের ব্যাংকের জায়গা। এটি দেশের প্রথম অগ্রণী ব্যাংকের শাখা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান নিজে এই শাখা উদ্বোধন করেছিলেন এবং এই শাখায় উনার একটি অ্যাকাউন্টও ছিল।”
“স্বাধীনতার পরে অগ্রণী ব্যাংকের জায়গা হিসেবেই এখানেই কার্যকম চালাচ্ছি- এটা এই এলাকার সবাই জানেন। আমাদের আশপাশের যত শাখা আছে সব শাখার গোডাউন ছিল এখানে; বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দলিল থাকতো।”
২০০৩ সালে হঠাৎ করে কিছু লোকজন দলিলপত্র তৈরি করে জায়গার মালিকানা দাবি করেন বলে মন্তব্য করে বৈষ্ণব দাস বলেন, “তারা আমাদের ছেড়ে দেওয়ার জন্য নোটিস করে এবং আমাদের ছেড়ে দিতে হয়। পরবর্তীতে আমরা আদালতে মামলা করি। এই মামলা এখনও চলমান।”
এর মধ্যে একাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় জায়গার দখলে নেওয়া হলেও পরে সেটা আবার বেদখল হয়ে যায় বলে তিনি জানান।
কারা জমিটি দখলে রেখেছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা মূলত এখানকার সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিম সাহেবের স্ত্রী গুলসানারা বেগমের নামে দলিল করা হয়েছে। উনার লোকজনই এই দখল করে রেখেছিল।”
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হাজী সেলিমের বাসায় গিয়েও কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান মদিনা ডেভলপারসের ডিজিএম মোহাম্মদ সাঈদ হোসেন মল্লিক দাবি করেন, গুলশানারা বেগমের নামে জমির ‘পেপারস’ আছে, কিন্তু ব্যাংকের কাছে কোনো ডকুমেন্ট নাই।
গুলশানারার আইনজীবী শ্রী প্রাণ নাথ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলে, জায়গাটি একজনের ব্যক্তির কাছ থেকে হাবিব ব্যাংক ভাড়া নিয়েছিল। হাবিব ব্যাংকের কাছ থেকে অগ্রণী ব্যাংক ভাড়া নিয়েছে। মূল মালিকের মৃত্যুর পর ওয়ারিশদের কাছ থেকে হাজী সাহেব উনার স্ত্রীর নামে কিনে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, ২০১৬ সালে অগ্রণী ব্যাংক স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে আদালতের কাছে। ঢাকার তৃতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলার কার্যক্রম চলছে। রোববার মামলার শুনানির দিন রয়েছে।
“এই জমির নামজারি, খারিজ- সব হাজী সাহেবের স্ত্রীর নামে।”