অনলাইনে খাজনা দেওয়ার পথ খুলল

খরচ আর সময় বাঁচিয়ে, হয়রানি এড়িয়ে অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) পরিশোধের সুযোগ করে দিতে ‘ডিজিটাল ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যারের’ পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Oct 2020, 12:17 PM
Updated : 28 Oct 2020, 12:17 PM

হাতের মুঠোয় ভূমিসেবা- এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বুধবার সচিবালয়ে এই সফটওয়্যারের পরীক্ষামূলক (১ম পর্যায়) কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী।

প্রথম পর্যায়ে আট জেলার নয়টি উপজেলার নয়টি পৌর/ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ১৯টি মৌজার মানুষ এই প্রক্রিয়ায় অনলাইনে ভূমি কর পরিশোধের সুযোগ পাবেন।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ঢাকার সাভার উপজেলার বাগধনিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস, মানিকগঞ্জ সদরের মানিকগঞ্জ পৌর ভূমি অফিস, চট্টগ্রামের আনোয়ারার খাসখামা ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং কিশোরগঞ্জ সদরের কিশোরগঞ্জ পৌর ভূমি অফিস এই পরীক্ষামূলক সফটওয়্যারের আওতায় থাকছে।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদরের নারায়ণগঞ্জ সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিস, জামালপুর সদরের জামালপুর পৌর ভূমি অফিস, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফরিদগঞ্জ পৌর ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস (শুধুমাত্র পৌর অংশে পাইলটিং হবে) এবং চাঁদপুরের মতলবের মতলব পৌর ভূমি অফিসেও পরীক্ষামূলক এ কার্যক্রম চলবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ভূমি সংস্কার বোর্ড এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতি বছর দেশের ৫১১টি উপজেলা ভূমি অফিসের অধীন তিন হাজার ৪৬২টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কোটি হোল্ডিং থেকে ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ প্রায় ৬০৬ কোটি টাকা আদায় করা হয়।  প্রায় তিন কোটি ৬০ লাখ মানুষ এসব ভূমি অফিস থেকে সেবা নেন।

ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার বর্তমান পদ্ধতি সম্পর্কে অজ্ঞতা বা স্বচ্ছ ধারণা না থাকায় অনেকেই জটিলতায় পড়েন। আবার ভূমির মালিক দেশের বাইরে থাকলে ভূমি উন্নয়ন কর দিতে পারেন না।

করের অর্থ পরিশোধে সশরীরে ভূমি অফিসে যেতে হয় বলে সময়ের পাশাপাশি ও খরচও বাড়ে। আবার কর দিতে গিয়ে হয়রানি ও বিড়ম্বনার অভিযোগও বিভিন্ন সময়ে এসেছে।

নতুন সফটওয়্যারের উদ্বোধন করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, এখন যে কোনো সময়, যে কোনো জায়গা থেকে ভূমি উন্নয়ন কর সংক্রান্ত তথ্য দেখার পাশাপাশি তা পরিশোধ করা যাবে। ফলে সময় ও যাতায়ত খরচ বাঁচবে।

এছাড়া ভূমি উন্নয়ন কর আদায় ও ব্যবস্থাপনা সহজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাও নিশ্চিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

তিনি বলেন, “ভূমি কর দেওয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত দেশের তিন কোটি ৬০ লাখ মানুষ এই সেবার মাধ্যমে সরাসরি উপকৃত হবেন। মানুষের ভূমি সংক্রান্ত হয়রানি কমবে ও ভূমি অফিসের দুর্নীতি বন্ধ হবে।”

২০২১ সালের জুলাই মাসের মধ্যে সারা দেশে অনলাইনে ভূমি কর দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা যাবে বলে আশা করছেন ভূমিমন্ত্রী।

ভূমি সচিব মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী জানান, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভূমি রাজস্ব আদায়ের পাইলটিং কার্যক্রম চালানোর জন্য নির্বাচিত ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।

ভূমি উন্নয়ন কর ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার ব্যবহার করে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে যে দাখিলা পাওয়া যাবে, তাকে বৈধতা দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় বুধবার একটি পরিপত্র জারি করেছে।

ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. ইয়াকুব আলী পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে নির্বাচিত জেলারগুলোর কয়েকজন ডিসি ছাড়াও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন।