ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাতিজিদের বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা করতে আদালতের আদেশ

সঙ্গীত তারকা ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাতিজিদের তাদের বাবার বাড়িতে ঢোকার ব্যবস্থা করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2020, 03:23 PM
Updated : 27 Oct 2020, 03:47 AM

বাবার বাড়িতে ঢুকতে দুই বোনের বাধা পাওয়ার খবর সংবাদ মাধ্যমে দেখে সোমবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।

সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মো. সাইফুর রহমান এক বিজ্ঞপ্তিতে উচ্চ আদালতের এ আদেশের কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, সোমবার রাতের মধ্যে দুই বোনকে ওই বাড়িতে ঢুকিয়ে তাদের অবস্থান নিশ্চিত করার পর গুলশান থানার ওসিকে তা টেলিফোনে তাকে জানাতে বলা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের এই বিশেষ কর্মকর্তা আদালতের আদেশ গুলশান থানার ওসিকে টেলিফোনে জানিয়েছেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এখন গুলশান ২ নম্বরে ৯৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের ওই বাড়িতে ফেরদৌস ওয়াহিদের প্রয়াত ভাই মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের দ্বিতীয় স্ত্রী আনজু কাপুর থাকেন।

জগলুলের প্রথম স্ত্রীর দুই সন্তান মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশশারা মোস্তফার অভিযোগ করেছেন, গত ১০ অক্টোবর তাদের বাবার ‍মৃত্যুর পর ওই বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে বাধা পান তারা।

মুশফিকার ও মোবাশশারার মায়ের সঙ্গে ২০০৫ সালে বিচ্ছেদের পর ভারতীয় নাগরিক আনজু কাপুরকে বিয়ে করেন বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন জগলুল।

মুশফিকা ও মোবাশশারা যেমন বাবার বাড়িতে ঢুকতে বাধা পাওয়ার অভিযোগ পুলিশকে করেছেন; তেমনি আনজু কাপুরও পাল্টা জিডি করেছেন থানায়। তাতে তিনি দাবি করেছেন, দুই বোন জোর করে ওই বাড়িতে ঢুকেছেন।

হাই কোর্ট আগামী ১ নভেম্বর মুশফিকা মোস্তফা, মোবাশশারা মোস্তফা ও আনজু কাপুরকে সঙ্গে নিয়ে আদালতে হাজির হতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে।

তার আগে ওই বাড়িতে ‍দুই বোনের ঢোকার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি বাড়িটির সামনে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করে তাদের নিরাপত্তা দিতেও গুলশানের ওসিকে বলা হয়েছে।

আদালতের এই আদেশ প্রতিপালনের লিখিত প্রতিবেদনও ১ নম্বর হাজির হওয়ার সময় নিয়ে যেতে হবে ওসিকে।

গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান এর আগে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “দুই পক্ষই জিডি করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

গুলশানের ১০ কাঠা প্লটের ওই বাড়ির মালিক ছিলেন জগলুল ওয়াহিদ। বিচ্ছেদের পর তার প্রথম স্ত্রী গুলশানেই অন্য এক বাসায় ওঠেন।

মুশফিকা ঢাকায় তার মায়ের সঙ্গে থাকেন। আর মোবাশশারা স্বামীর সঙ্গে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে।

গত ১০ অক্টোবর বাবার মৃত্যুর পর দাফন শেষে দুই বোন বাবার বাড়িতে ঢুকতে গিয়েছিলেন। বাধা পাওয়ার ঘটনা জানিয়ে ১২ অক্টোবর তারা গুলশান থানায় জিডি করেন।

ভারতের বেঙ্গালুরুতে জন্ম নেওয়া আনজু কাপুর প্রায় এক দশক ধরে ঢাকায় বসবাস করছেন। তিনি পেশায় একজন পোশাক ব্যবসায়ী, আরিয়ানা স্টাইলস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তিনি। বলিউডের তরুণ চলচ্চিত্র অভিনেতা ও প্রযোজক ধীরাজ কাপুর তার ছোট ভাই। 

আনজু পুলিশকে বলেছেন, জগলুল ওয়াহিদ তার সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ তাকে উইল করে গেছেন।

গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আমিনুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিয়ের যে কাগজপত্র তিনি দিয়েছেন, তা যাচাই করে দেখা হচ্ছে। তিনি ভারতীয় নাগরিক হওয়ায় সম্পত্তি রেজিস্ট্রি করে দেওয়ার বিধান নেই। সে কারণে আনজু কাপুরকে সম্পত্তির তিন ভাগের একভাগ ওসিহত করে দেওয়া হয়েছে বলে সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের একটি নথি পাওয়া গেছে। সেটাও যাচাই করা হচ্ছে।”

আমিনুল ইসলাম বলেন, জগলুল ওয়াহিদের দুই মেয়ে গত ১৫ বছর ধরে ওই বাসায় যান না। বাবা মারা যাওয়ার পর তারা ওই বাসায় গিয়েছিলেন।

স্বজনদের এ বিষয়ে ফেরদৌস ওয়াহিদের বক্তব্য, বিষয়টি যেহেতু আইনি লড়াইয়ে গড়িয়েছে, তাই আদালতেই ফয়সালা হবে।