বাড়িতে অভিযান, ইরফান সেলিম র‌্যাব ‘হেফাজতে’

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর সাংসদ হাজী সেলিমের একটি বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালিয়ে তার ছেলে ইরফান সেলিমকে ‘হেফাজতে’ নিয়েছে র‌্যাব।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Oct 2020, 08:04 AM
Updated : 26 Oct 2020, 09:39 AM

এই এলিট বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ সোমবার দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সোয়ারি ঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের একটি বাড়ি আছে, সেটা ঘেরাও করে র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালাচ্ছে।” 

পরে র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) কর্নেল তোফায়েল মোস্তফা সরোয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের টিমের সদস্যরা হাজী সেলিমের ছেলেকে হেফাজতে নিয়েছে।”

ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি

ইরফান সেলিম নিজেও একজন জনপ্রতিনিধি; ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তিনি।

রোববার রাতে ধানমণ্ডি এলাকায় হাজী সেলিমের গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় সোমবার একটি মামলা হয় থানায়।

তাতে ইরফান সেলিম ছাড়াও হাজি সেলিমের প্রোটকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু, মোহাম্মদ জাহিদ ও মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করা হয়।

তাদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে পথরোধ করে সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর, জখম ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন মামলার বাদী নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খান।

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর সোমবার দুপুরে সোয়ারি ঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায় র‌্যাব। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

মামলা হওয়ার পরপরই গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে ধানমণ্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী জানিয়েছেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ রোববার রাত পৌনে ৮টার দিকে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে কলাবাগানের দিকে যাচ্ছিলেন। ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো একটি কালো রঙের ল্যান্ড রোভার গাড়ি (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৫৭৩৬) পেছন থেকে তার মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়।

ওয়াসিফ ও তার স্ত্রী ধাক্কা সামলে মোটরসাইকেল থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে ওই গাড়ি থেকে জাহিদ, দিপু এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিনজন ‘অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ’ করতে করতে নেমে আসে এবং ‘মারধর’ শুরু করে।

তারা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ ও তার স্ত্রীকে ‘উঠিয়ে নেওয়ার এবং হত্যার’ হুমকি দেয় বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর সোমবার দুপুরে সোয়ারি ঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে র‌্যাবের অভিযানের সময় বাইরে উৎসুক মানুষের ভিড়। ছবি: মাহমুদ জামান অভি

ওই ঘটনার পরে একজন প্রত্যক্ষদর্শী মোবাইল ফোনে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফের বক্তব্য ধারণ করেন, যা ইতোমধ্যে ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

সেখানে নৌবাহিনীর এই কর্মকর্তাকে রক্তাক্ত মুখে বলতে শোনা যায়, তিনি পরিচয় দেওয়ার পরও তাকে মারধর করা হয়েছে, তার স্ত্রীর গায়েও ‘হাত দিয়েছে’।

ধানমণ্ডির ওসি ইকরাম আলী বলেন, “গাড়িটি ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের হলেও ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না। গাড়িতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ছিলেন।”

অভিযোগের বিষয়ে হাজী সেলিম বা তার ছেলে ইরফান সেলিমের বক্তব্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানতে পারেনি।