সমন্বিত ভর্তি এখন সময়ের বড় দাবি: শিক্ষামন্ত্রী

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে ‘সমন্বিত’ ভর্তি পরীক্ষার আয়োজনকে এখন সময়ের ‘সবচেয়ে বড় দাবি’ হিসেবে দেখছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2020, 10:49 AM
Updated : 21 Oct 2020, 10:49 AM

গুচ্ছ পদ্ধতিতে এই পরীক্ষা আয়োজনে আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সঙ্গে নিয়েই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের এবার কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে তা জানাতে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে নিজের মত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী।

এক প্রশ্নে দীপু মনি বলেন, “আমাদের গত কয়েক বছর ধরে প্রচেষ্টা ছিল সমন্বিত পরীক্ষা শুরুর। আমরা মনে করি, এ বছর যে বাস্তবতা আমাদের, তাতে এ সমন্বিত পরীক্ষাটি এখন সময়ের সবচেয়ে বড় দাবি বোধ হয়।”

বিশ্ববিদ্যায়গুলোতে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নিতে বেশ কয়েক বছর ধরে আলোচনা চললেও বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আপত্তিতে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।

গতবছর কয়েকটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনও একমত হতে পারেনি। ফলে শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে।

এভাবে পরীক্ষায় অংশ নিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির পাশাপাশি অর্থ খরচ হয়। কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে শিক্ষার্থীদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বসতে হলে স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়বে।

দীপু মনি বলেন, “সমন্বিত পরীক্ষা আমরা যদি সারা দেশব্যাপী নিতে পারি তাহলে কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখেই হয়তো সেটি করা সম্ভব। কারণ প্রতি জেলায় যদি পরীক্ষা হয় এবং সারাদেশে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আছেন, তারাই কিন্তু নানানভাবে ইনভিজিলেটর, পরীক্ষা পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত থেকে মান নিশ্চিত করতে পারেন। আমাদের ধারণা, এটি করা সম্ভব।”

কিন্তু গত বছরের শেষে এবং এ বছরের গোড়ায় যখন সমন্বিত পরীক্ষা নিয়ে কথা হচ্ছিল, কয়েকটি বড় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যে তখন আপত্তি করেছিল, সে কথাও মন্ত্রী বলেন।

তিনি বলেন, “আমাদের মেডিকেল কলেজে সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা হয়, গতবার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর হয়েছে। একইভাবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সমন্বিত পরীক্ষা হতে পারে।

“আমরা তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে কী পদ্ধতিতে হবে সে বিষয়টি সিদ্ধান্ত আমরা জানিয়ে দেব। এটি নিয়েও আমাদের আলাচনা চলছে।”

গত ৭ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তাই জেএসসি ও এসএসসির ফলাফলের ভিত্তিতে ডিসেম্বরের মধ্যে এইচএসসির চূড়ান্ত মূল্যায়ন ফল ঘোষণা করা হবে, যাতে জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। এর মধ্যে ৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ হাজার আসনে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান উচ্চ মাধ্যমিক পার হওয়া শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, মহামারীর মধ্যে সবাইকে ঢাকায় না এনে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেবে তারা। পাশাপাশি এবার পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হবে।