বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেবে ঢাবি, নম্বরও কমছে

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সবাইকে ঢাকায় না এনে শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

রাসেল সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2020, 11:33 AM
Updated : 21 Oct 2020, 10:42 AM

পাশাপাশি এবার পরীক্ষা পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এতদিন মোট ২০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হত। সেখানে ১২০ নম্বরের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি ও এইচসির জিপিএর ভিত্তিতে ৮০ নম্বরের মধ্যে প্রাপ্ত নম্বর যোগ করে মেধাতালিকা তৈরি করা হত।

এবার মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। এসএসসি ও এইচএসসির জিপিএর জন্য থাকছে ২০ নম্বর, বাকি ৮০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। তার মধ্যে আবার ৩০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৫০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে।

মঙ্গলবার ডিনস কমিটির বৈঠকে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে  বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সরাসরিই ভর্তি পরীক্ষা নেব। তবে পরীক্ষা বিভাগ ওয়াইজ সেন্ট্রালাইজড করব আমরা। এবার আমরা সব পরীক্ষা ঢাকায় নেব না। ঢাকার বাইরে বিভাগীয় শহরের বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা নিয়ে সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা এই পরীক্ষাগুলো নেওয়ার চেষ্টা করব।”

অধ্যাপক মাকসুদ কামাল, “এ বছর ভর্তি পরীক্ষা ১০০ নম্বরের হবে। এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত জিপিএ অনুযায়ী থাকবে ২০ নম্বর। বাকি ৮০ নম্বরের মধ্যে এমসিকিউতে ৩০ এবং রিটেনে ৫০ নম্বর থাকবে।”

করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা না নিয়ে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল গড় করে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই ফল প্রকাশ করা হবে।

সেই বাস্তবতায় এতদিন ভর্তিচ্ছুদের মূল্যায়নে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলের উপর ৮০ নম্বর রাখা হলেও এবার তা কমিয়ে ২০ নম্বর করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া গত বছর ৭৫ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক ও ৪৫ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নিলেও এবার নৈর্ব্যক্তিকে ৩০ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষা ৫০ নম্বরের করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এ বিষয়ে অধ্যাপক মাকসুদ কামাল বলেন, “পরীক্ষা ১০০ নম্বরে হবে। তার অর্থ এই নয় যে, আগে যে ২০০ নম্বরে হত তার থেকে গুণেমানে কম। এ বছর রেজাল্টের উপর কম নম্বর ধরা হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের যাচাই-বাছাই করে নিতে চাচ্ছি। গতবারও আমাদের রিটেন পরীক্ষা ছিল।”

ভর্তি পরীক্ষা কবে নাগাদ হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়টা এইচএসসির ফলাফল প্রকাশের উপর নির্ভর করছে। ফলাফল পাওয়ার পরপরই যত দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্ভব আমরা পরীক্ষা নেব। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে রেজাল্ট পাবলিশ হলে ভর্তি পরীক্ষা জানুয়ারিতে নিতে পারব।

“ফলাফল প্রকাশের পর দ্রুত সময়ে যাতে পরীক্ষা নেওয়া যায় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি ইউনিটের যে সংশিষ্ট ডিনরা আছেন, তাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।”

বৈঠকে অংশ নেওয়া সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা প্রকৃত মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা করে দিতে চাই। যেহেতু উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাটা হচ্ছে না এবং জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফল থেকে গড় বের করে মূল্যায়ন করা হবে, সেখানে সবাই পাস করবে, অনেকেই ভালো রেজাল্ট করবে। সব কিছু বিবেচনা করেই আমরা পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের নিতে চাই।”

বিভাগীয় শহরগুলোতে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ভর্তি পরীক্ষা তো লাগবেই। এই পরিস্থিতিতে যাতে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সমস্যা ও ভোগান্তি লাঘব করা যায়, সেটি বিবেচনা করে এ বছর আমরা এক জায়গায় পরীক্ষা নিচ্ছি না। ডিনস কমিটির মিটিংয়ে এই মৌলিক বিষয়গুলো পর্যালোচনা করা হয়েছে।”