রাঙ্গুনিয়ায় বৌদ্ধ বিহার স্থাপনের নামে বন দখলের অভিযোগ

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বৌদ্ধ বিহার স্থাপনের নামে ভিক্ষু শরণংকর অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনভূমি দখল, পাহাড় ও গাছপালা কাটছেন বলে অভিযোগ করেছেন দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতারা।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2020, 08:39 PM
Updated : 17 Oct 2020, 09:12 PM

বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি-কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় এবং বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব সাবেক ডিআইজি অমর বড়ুয়া স্বাক্ষরিত তিন পৃষ্ঠার এ বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়েছে।

বন দখলের কর্মকাণ্ডকে ‘বৌদ্ধ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমর্থনযোগ্য নয়’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তারা।

শনিবার পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “মহামতি গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ও বৌদ্ধ ধর্মের মর্মবাণী ‘অহিংসা পরম ধর্ম’। এ কারণে অবৈধভাবে বন ও অন্য ধর্মের উপাসনালয়, শ্মশান দখল ও কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা বৃহত্তর বৌদ্ধ সমাজ কখনও সমর্থন করে না। এমন কাজ মহামতি বুদ্ধের অহিংসা, করুণা ও মৈত্রীর বাণীকে খর্বকারী।”

বৌদ্ধ নেতারা অভিযোগ করেন, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ফলহারিয়া গ্রামের কাছে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া ২০১২ সালে জ্ঞানশরণ মহারণ্য বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করেন ভিক্ষু শরণংকর থেরো। বনবিভাগের বাধানিষেধ সত্ত্বেও ক্রমে ক্রমে বনের আরও জায়গা বিহারের সাথে যুক্ত করা, পাহাড় ও গাছপালা কাটা হলে বন বিভাগ ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় ‘ভিন্ন ধর্মের প্রতি বিষোদগারের’ও উল্লেখ ছিল।

এসবের সুরাহা না হওয়ায় গত ৯ জুলাই বনবিভাগ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে সেখানে সব অবৈধ স্থাপনার কাজ বন্ধ করা হয় এবং অবৈধ দখলদারিত্ব ও ধর্ম অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেওয়ার দায়ে আরও ডজনখানেক মামলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, “এ ঘটনার পরপরই কেউ কেউ বিষয়টিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য একে রাজনৈতিক রূপদানের অপচেষ্টা করে। এ অবস্থায় দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতারা এলাকা পরিদর্শন করেন ও মৈত্রীপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার আহ্বান জানান।

“শরণংকর ভিক্ষুর ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিদেশে অবস্থানকারী বৌদ্ধদের কাছে সরকার, সরকারের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি, তাদের পরিবার এবং কয়েকজন শীর্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষুর বিরুদ্ধে বিষোদগার ছড়ানো হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ সংগঠনের নেতারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমেই সমাধানের পক্ষে মতপ্রকাশ করেন।”