অবৈধ অস্ত্র ও গুলি রাখার দায়ে ওই দম্পতিকে দোষী সাব্যস্ত করে দুই ধারায় ২০ বছর ও সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার ১ নম্বর বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ।
সোমবার ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, “শামিমা নূর পাপিয়া এবং তার স্বামী মফিজুর রহমান সুমন সজ্জন রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তাদের বাসা থেকে ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়, যার কোনো বৈধতা থাকতে পারে না। এত টাকা থাকার কোনো যুক্তিও থাকতে পারে না।
“তারা তথাকথিত রাজনীতিবিদ। নিজেদের প্রাপ্তি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। দেশ ও জনগণের কল্যাণে তারাতো নিয়োজিত ছিলেনই না বরং দেশের জন্য তারা মারাত্মক বিপজ্জনক ছিলেন। যে কোনো অন্যায় কাজে লাগানোর জন্য তারা তাদের খাটের তোষকের তলায় একটি বিদেশি পিস্তল দুটি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি রেখেছিলেন। এ অবৈধ অস্ত্র ও গুলি তাদের নিয়ন্ত্রণ, দখল ও জ্ঞানের মধ্যে ছিল।”
নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক পাপিয়া ও তার স্বামী সুমনকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সে সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল নোট, ১১ হাজার ৪৮১ ডলার, শ্রীলঙ্কা ও ভারতের কিছু মুদ্রা এবং দুটি ডেবিট কার্ড জব্দ করা হয়।
র্যাবের পক্ষ থেকে সে সময় বলা হয়, পাপিয়া গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেল ভাড়া নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ চালিয়ে যে আয় করতেন, তা দিয়ে হোটেলে বিল দিতেন কোটির টাকার উপরে।
গ্রেপ্তারের পর পাপিয়া ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে র্যাব।
এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় গত ২৩ অগাস্ট অভিযোগ গঠন করে পাপিয়া ও তার স্বামী বিচার শুরু করে আদালত। শুনানি শুরুর আড়াই মাসের মাথায় সোমবার তার রায় হল।
রায়ে বিচারক বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(এ) ও ১৯ (এফ) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে।
তবে আসামি পাপিয়া নারী হওয়ায় এ আইনের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড তাকে দেওয়া হয়নি। তার স্বামীকেও একই শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
দুই ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে পাপিয়াকে মোট ২০ বছেরের সাজাই খাটতে হবে।
আলোচিত এই দম্পতির বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত যে চারটি মামলা হয়েছে, তার মধ্যে অস্ত্র আইনের এই মামলাতেই সবার আগে রায় এল।