ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে উকিল নোটিশ

ধর্ষণের দ্রুত বিচারে বিশেষ আদালত এবং ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড চেয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির আইন সম্পাদক মোহাম্মদ ফুয়াদ হোসেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2020, 04:13 PM
Updated : 6 Oct 2020, 04:13 PM

মঙ্গলবার বিকেলে এই ছাত্রলীগ নেতার পক্ষে নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ইমেইল থেকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নোটিশটি পাঠিয়েছি। বুধবার স্বরাষ্ট্র সচিবকে যোগ করে সবাইকে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো হবে।”

নোটিশে বলা হয়েছে, “ধর্ষণের ঘটনা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে ধর্ষণ নিবারণ প্রতিরোধ ও ভিকটিমদের পুনর্বাসনে বেসরকারিভাবে উদ্যোগ থাকলেও সরকারিভাবে তা নেই। 

“তাই সরকারের উচিত সরকারের নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ের অধীনে ধর্ষণ নিবারণ প্রতিরোধ ও ভিকটিমদের পুনর্বাসনে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা।”

আইন ও সালিশ কেন্দ্রকে উদ্ধৃত করে দেশে ক্রমশ বাড়তে থাকা ধর্ষণের পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়েছে নোটিশে।

বলা হয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট নাগাদ দেশে ৮৮৯ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ধর্ষণের পর মৃত্যু হয়েছে ৪১ ভিকটিমের।

আর এই আট মাসে ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১৯২ জন নারী এবং ৯ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন।

“আমার মক্কেল মনে করেন, বিচারে ধীরগতি ও লঘু দণ্ডের কারণে দেশে দিন দিন ধর্ষণ বাড়ছে এবং বাস্তবতার নিরিখে বিদ্যমান আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞা বিস্তৃতভাবে নেই।

“তাছাড়া দেখা যাচ্ছে যিনি ধর্ষণের শিকার বা বর্বর নির্যাতনের শিকার তার ছবিই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিদ্যমান সংজ্ঞা ও আইনে এদের সংজ্ঞায়িত করে তাদের শাস্তির বিধান থাকা দরকার।     

“পাশাপাশি ধর্ষণের অপরাধে দ্রুত বিচার ও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে বিশেষ আদালত গঠনের জন্য এ নোটিশ পাঠানো হল।”

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে জনস্বার্থে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিশে।

দণ্ডবিধির ৩৭৬ ধারা এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ এর ৯ ধারায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

এদিকে বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা।

এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, কোষাধ্যক্ষ রাগিব রউফ চৌধুরী প্রমুখ।

‘নারীর প্রতি সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন’ ব্যানারে এই কর্মসূচিতে আইনজীবীরা ছাড়াও মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট), লিগ্যাল ভয়েস ফাউন্ডেশন, জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে নারী আইনজীবীদের সুরক্ষায় যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি গঠনের জন্য সমিতির কাছে আবেদন করেছেন আইনজীবী ইশরাত হাসান।