গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা: ৩ আসামির সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ড

প্রায় দুই দশক আগে চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী হত্যা মামলায় জজ আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামির সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আপিল বিভাগ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Oct 2020, 06:47 AM
Updated : 6 Oct 2020, 08:34 AM

আসামিদের আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি মোহাম্মদ ইমান আলীর নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার এ রায় দেয়।

চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরী

রায়ে সর্বোচ্চ আদালত আপিল খারিজের পাশাপাশি সাজা সংশোধন করে আসামিদের স্বাভাবিক মৃত্যু পর্যন্ত, অর্থাৎ আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে তিন আসামিকে।   

এই তিন আসামি হলেন- তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু, মোহাম্মদ আজম  ও আলমগীর কবির ওরফে বাইট্টা আলমগীর। তিনজনই জামায়াত-শিবিরের কর্মী।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত। আসামিদেরমধ্যে আলমগীর কবিরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, মন্টু ও আজমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা।

পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত বিডিনিউজ টোয়ন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকে শর্ট অর্ডার হয়েছে। আসামিদের আপিল ও জেল আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তবে তাদের সাজা সংশোধন করে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। কোন যুক্তিতে কেন সাজা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে তা পুরো রায় বের হলে জানা যাবে।”

তিন আসামি এতদিন কারাগারে কনডেম সেলে ছিলেন জানিয়ে অমিত দাশগুপ্ত বলেন, “তাদের এখন কারাগারে সাধারণ সেলে স্থানান্তর করা হবে।”

২০০১ সালের ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর জামাল খান রোডে অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীর (৬০) বাসায় ঢুকে তার মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা।

তার স্ত্রী রেলওয়ের তৎকালীন অডিট কর্মকর্তা উমা মুহুরী সেদিনই চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

চট্টগ্রামের নাজিরহাট কলেজের অধ্যক্ষ গোপাল কৃষ্ণ মুহুরীওই মামলার বিচার শেষে নাসির ওরফে গিট্টু নাসির, আজম, আলমগীর ও মন্টুকে মৃত্যুদণ্ড দেয় জজ আদালত।

এছাড়া মহিউদ্দিন ওরফে মহিনউদ্দিন, হাবিব খান, সাইফুল ওরফে ছোট সাইফুল ও শাহাজাহানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় রায়ে।

বিচারিক আদালতের ওই রায়ের পর মামলার ডেথ রেফারেন্স হাই কোর্টে আসে, পাশাপাশি কারাগারে থাকা আসামিরাও আপিল করেন। এর মধ্যে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া গিট্টু নাসির ২০০৫ সালের ২ মার্চ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। মারা যান যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছোট সাইফুলও।

হাই কোর্ট শুনানি শেষে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ২০০৬ সালের ১৯ জুলাই রায় দেয়। সেই রায়ে যাবজ্জীবন সাজার আসামি শাহাজাহান ও সাইফুল ওরফে ছোটো সাইফুল খালাস পান, অন্যদের সাজা বহাল থাকে।

এরপর মৃত্যদণ্ডের তিন আসামির মধ্যে আলমগীর কবির খালাস চেয়ে আপিল বিভাগে আপিল করেন। আর তসলিম উদ্দীন ওরফে মন্টু, মোহাম্মদ আজম করেন জেল আপিল।

এসব আপিলের শুনানি করে সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার হাই কোর্টের রায় সংশোধন করে চূড়ান্ত রায় দিল।