‘বিয়েতে রাজি না হওয়ায়’ নীলাকে কুপিয়ে হত্যার ‘স্বীকারোক্তি’ মিজানুরের

সাভারের স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এই মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Oct 2020, 02:12 PM
Updated : 1 Oct 2020, 02:12 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিচারিক হাকিম রাজীব হাসানের খাসকামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি। পরে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানো আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এ তথ্য জানান।

২০ বছর বয়সী মিজানুর বিবাহিত হয়েও নীলাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তার ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে হত্যা করেন বলে জবানবন্দিতে ‘স্বীকার করেছেন’ তিনি।

“আমার বন্ধু সেলিম যখন বলে যা করার আজই করে ফ্যাল। নীলা বিয়েতে রাজি হচ্ছিল না বলে সেলিমের দেওয়া ছুরি দিয়ে কোপাই নীলাকে। তখন সেলিম ও সাকিব কিছুটা দূরে দাঁড়িয়েছিল,” মিজানুর জবানবন্দিতে বলেছেন বলে জানান অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর বাবুল।

জবানবন্দির বরাত দিয়ে তিনি বলেন, মিজানুর আগে থেকে নীলাকে পছন্দ করতেন। এর মধ্যে তার বাবা অন্য একটি মেয়ের সঙ্গে মিজানুরের বিয়ে দিয়ে দেন। তারপরেও নীলাকে ভুলতে পারছিলেন না তিনি।

ঘটনার দিন তারা তিনজনে একটি হোটেলে খাওয়া শেষে নীলা তার ভাইকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরার সময় তাদের পথরোধ করেন।

ভাইয়ের কাছ থেকে ছিনিয়ে নীলাকে তাদের নিজেদের একটি পরিত্যক্ত টিনশেড ঘরে নিয়ে যান মিজানুর। বিয়েতে রাজি না হয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তার গলায় বা হাত ঢুকিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে কোপাতে থাকেন মিজানুর। নীলা  ও তার ভাইয়ের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তারা তিনজন পালিয়ে যান। সাভারের একটি এলাকা থেকে লুঙ্গি দিয়ে মুখ ঢেকে পালিয়ে বাসে করে আরিচায় চলে যান মিজানুর। তারপর পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক এলাকার নারায়ণ রায়ের মেয়ে নীলা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। পৌর এলাকার কাজী মোকমা পাড়ার এক বাড়িতে তার পরিবার ভাড়া থাকে।

গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার পালপাড়া এলাকায় নীলাকে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নীলার বাবা নারায়ণ রায় পরদিন মিজানুর রহমান, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাকে আসামি করে সাভার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার একটি ইটভাটার পাশ থেকে মিজানুর ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে বিচারক তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

সাত দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মিজানুর স্বেচ্ছায় দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার থানার এসআই নির্মল চন্দ্র ।

মিজানুরের আগে গ্রেপ্তার তার বাবা ও মাকেও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।