‘নারী পাচার চক্রের’ পাঁচজন গ্রেপ্তার

সীমান্ত এলাকা দিয়ে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 28 Sept 2020, 09:00 AM
Updated : 28 Sept 2020, 01:44 PM

সোমবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিভাগের অর্গানাইজড ক্রাইম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার এ কথা জানান।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. শাহীন, মো. রফিকুল ইসলাম, বিপ্লব ঘোষ, আক্তারুল ও মো. বাবলু। তাদেরকে রোববার যশোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান রেজাউল।

তিনি বলেন, “শাহীনের কাজ ছিল ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের বিভিন্নভাবে প্রলুব্ধ করে পাচারের উদ্দ্যেশে গাড়ি চালিয়ে সীমান্ত এলাকায় নিয়ে যাওয়া। যশোরের সীমান্ত এলাকায় তাদের রাখা হত রফিকুলের বাড়িতে।”

সিআইডি বলছে, গ্রেপ্তারদের মধ্যে বিপ্লব হলেন রফিকুলের সহযোগী। আর সীমান্ত দিয়ে নৌকায় পাচারের কাজটি করতেন বাবলু।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে রেজাউল হায়দার বলেন, এই চক্রের আরও চার সদস্যকে এর আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

"বাংলাদেশ ও ভারতের দুই চক্রের যোগসাজশে পাচারের কাজটি চলত। পাচারের শিকার নারীদের তারা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে বাধ্য করত।"

২০১৯ সালের নভেম্বরে রাজধানীর সবুজবাগ থানায় এক নারী ওই মামলা দায়ের করেন। সেখানে বলা হয়, মালয়েশিয়ায় ভালো চাকরি দেওয়ার কথা বলে তার ১৪ বছরের মেয়েকে পাচারের চেষ্টা ও ধর্ষণ করে পাচারকারীরা।

জান্নাতুল ওরফে জেরিন ও মহেনুজ্জামান ওরফে প্রতীক খন্দকার ওরফে বাবুর নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয় সেই মামলায়। জেরিন ও প্রতীক স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাদীর বাসায় সাবলেটে হিসেবে ভাড়া থাকতেন।

যশোরের বেনাপোল সীমান্ত এলাকা দিয়ে ওই কিশোরীকে ভারতে পাচারের সময় পুলিশ উদ্ধার করে জানিয়ে সিআইডির কর্মকর্তারা বলেন, এ মামলার তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর গত ২৫ অগাস্ট তারা প্রতীক ও জেরিনকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জেরিন জামিনে বেরিয়ে যান।

এর আগে এ মামলায় আরও দুইজনকে গ্রেপ্তর করা হয় জানিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার বলেন, “গ্রেপ্তার ওই আসামি ও সাক্ষীদের দেওয়া তথ্যে মানব পাচার চক্রের নতুন এই পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়।”

আগে গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে ‘২০ জনকে পাচার করার কথা স্বীকার করেছে’ বলে জানান রেজাউল।

সীমান্ত দিয়ে নারী পাচারে বিজিবি বা বিএসএফের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে এই সিআইডি কর্মকর্তা বলেন, “দুই দেশের সীমান্ত এলাকাতেই দালাল চক্র আছে। তারা অবৈধভাবে বর্ডার পার করিয়ে দেয়। মাঝে মধ্যে তারা ধরাও পড়ে। তবে এই ক্ষেত্রে সরকারি কোনো সংস্থা জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।”

গ্রেপ্তার পাঁচজনকে সোমবারই আদালতে হাজির করা হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সিআইডি ঢাকা মহানগরের (পশ্চিম) বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা এবং জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জিসানুল হক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।