সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলা: রুলের উপর শুনানি শুরু

দেড় যুগ আগে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা এক মামলা বাতিল প্রশ্নে রুলের উপর হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Sept 2020, 07:46 PM
Updated : 24 Sept 2020, 07:46 PM

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার প্রথম দিন শুনানি হয়।

আদালত ২৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির তারিখ রেখেছে। 

আদালতে আসামিপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনীর। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যার্টনি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০২ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে বিরোধীদলীয় নেতা থাকার সময় সাতক্ষীরায় গেলে তার গাড়িবহরে হামলা হয়।

অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল মুনীর সাংবাদিকদের বলেন, “ওই ঘটনায় হত্যাচেস্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা হয়েছিল। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি রকিবের বয়স সে সময় ১০ বছর ছিল উল্লেখ করে মামলা বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাই কোর্টে আবেদন করে রকিব।

“এর পরিপ্রেক্ষিতে গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার মামলার কার্যক্রমে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাই কোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দেয়। দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি এভাবেই পড়ে ছিল।”

বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি এ সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত অ্যার্টনি জেনারেল এস এম মুনীর।

তিনি বলেন,  “ওই রুলের ওপর বৃহস্পতিবার থেকে শুনানি শুরু হয়। আগামী মঙ্গলবার শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে।”

হাই কোর্টে অন্য আসামিদের করা আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনের মামলার কার্যক্রমও স্থগিত হয়ে আছে। এগুলো শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান এস এম মুনীর। 

রাষ্ট্রপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরায় যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

সড়ক পথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলিও ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে।

এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতাকর্মী ও সাংবাদিক।

এই ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে যান, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।

ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেয়।

তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সংসদ সদস্য হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।

২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন হয়। এরপর আসামিপক্ষ হাই কোর্টে পৃথক আবেদন ও আপিল করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়। পরে মামলার কার্যক্রম আর এগোয়নি।