হাই কোর্টে সংগ্রাম সম্পাদকের জামিন

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে এক বছরের অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Sept 2020, 08:19 AM
Updated : 23 Sept 2020, 08:19 AM

বিচারপতি মো. এমদাদুল হক ও বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহবুব হোসেন ও মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।

গত ১১ মে ভার্চুয়াল হাই কোর্ট চালু হলে সেদিনই আবুল আসাদের জামিন চেয়ে আবেদন করেছিলেন আইনজীবীরা।

১৩ মে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ আবুল আসাদকে জামিন না দিয়ে আবেদনটি হাই কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে উপস্থাপন করতে বলেছিলেন।

আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সেই জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করা হলে আদালত সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের জামিন প্রশ্নে রুল জারির পাশাপাশি এক বছরের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন।”

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ফাঁসি কার্যকর করা হয় ‘মিরপুরের কসাই’খ্যাত কাদের মোল্লার।

সেইদিনের স্মরণে জামায়াতে ইসলামীর মুখপত্র হিসেবে পরিচিত দৈনিক সংগ্রামের প্রথম পাতায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যার শিরোনাম ছিল ‘শহীদ আবদুল কাদের মোল্লার ৬ষ্ঠ শাহাদাত বার্ষিকী আজ’।

এর প্রতিবাদে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ সমাবেশ করে সংগ্রাম পত্রিকার কয়েকটি কপি পোড়ান ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী। বিকালে দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয় ঘেরাও ও ভাংচুর করে বিক্ষুব্ধরা।

দৈনিক সংগ্রামের কার্যালয়টি জামায়াত-শিবিরের অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে অভিযোগ করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পত্রিকাটির ‘ডিক্লারেশন’ বাতিলের দাবি জানানো হয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে।

ওই ঘটনার পর সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদকে ওই রাতেই হাতিরঝিল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোহাম্মদ আফজাল ওই থানায় মামলা দায়ের করেন।

দণ্ডবিধির রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা এ মামলায়  আবুল আসাদ ছাড়াও প্রধান প্রতিবেদক বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী এবং বার্তা সম্পাদক সাদাত হোসেনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ৬-৭ জনকে আসামি করা হয় এজাহারে।

আবুল আসাদকে গ্রেপ্তার করার পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর তাকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনদিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

সেই রিমান্ড শেষে তাকে ১৮ ডিসেম্বর ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করেন তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার পরিদর্শক (অপারেশনস) গোলাম আযম।

সে আদালতে আবুল আসাদ জামিন চাইলে বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে আবুল আসাদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।