ধর্ষণ: ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ৭ অক্টোবর

ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূরসহ কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয়জনের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় দায়ের হওয়া মামলার এজাহার গ্রহণ করেছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2020, 03:24 PM
Updated : 21 Sept 2020, 04:26 PM

সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা এজাহার গ্রহণ করে এসআই আসলাম উদ্দিনকে ৭ অক্টোবর তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের এক স্নাতকোত্তর শ্রেণির এক ছাত্রী ওই মামলাটি করেন। তাতে নূরের বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে একই বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুনকে, যিনি কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে রয়েছেন।

লালবাগ থানা ওসি কে এম আশরাফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, একই বিভাগের শিক্ষার্থী হাসান আল মামুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

“তার সাথে আরও পাঁচজনকে সহযোগী হিসেবে আসামি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে নূর (ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর) তিন নম্বর। মামলায় ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে লালবাগের নবাবগঞ্জ এলাকায়।”

তালিকায় সহযোগী আসামি হিসেবে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নূরের সঙ্গে আরও দুই যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগ (২৮) ও সাইফুল ইসলাম (২৮), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা (২৫) ও কর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল্লাহ হিল বাকির (২৩) নাম রযেছে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে হাসান আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার বিষয়ে আমরা কিছু জানি না। যে অভিযোগের কথা বললেন, এমন কোনো কিছু আমাদের দ্বারা হয়নি।

“এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হতে পারে, বিষয়টি সম্পর্কে  বিস্তারিত জেনে আমরা প্রতিবাদ জানাব।”

আর এবিষয়ে চেষ্টা করে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের মন্তব্য জানা যায়নি।

মামলার এজহারের তথ্য অনুযায়ী, ওই ছাত্রী নিজেও বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে ২০১৮ সালের জুলাইয়ে ঘনিষ্টতা তৈরির পর বিভিন্ন সময় হাসান আল মামুনের সঙ্গে ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে কথোপকথন হয়, যেখানে ‘শারীরিক সম্পর্কের’  ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি বেলা ১টার দিকে ওই ছাত্রীকে মামুন লালবাগের নবাবগঞ্জ বড় মসজিদ রোডে তার বাসায় যেতে বলে। ওই ছাত্রীর ভাষ্য, ‘বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে’ সেখানে তাকে ধর্ষণ করা হয়। ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে ১২ জানুয়ারি মামুন তার বন্ধু সোহাগের সঙ্গে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

এরপর মামুনকে বিয়ের কথা বললে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। বিষয়টি নিয়ে ২০ জুন নুরুল হক নুরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। নূর তখন ‘মীমাংসার আশ্বাস’ দিলেও পরে অবস্থান পাল্টে তাকে ‘বাড়াবাড়ি করতে’ নিষেধ করেন বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।

ওই ছাত্রীকে উদ্ধৃত করে এজহারে বলা হয়েছে, “নূর বলছে, আমি যদি বাড়াবাড়ি করি, তাহলে তাদের ভক্তদের দিয়ে আমার নামে উল্টাপাল্টা পোস্ট করাবে এবং আমাকে পতিতা বলে প্রচার করবে।”

ইতিমধ্যে মামলার আসামি সাইফুল ‘কুৎসা রটিয়েছে’ এবং নাজমুল ও বাকি ম্যাসেঞ্জারে তাকে উত্ত্যক্ত করে ‘মানসিকভাবে বিপর্যস্ত’ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

মামলায় দেরির কারণ তুলে ধরে ওই ছাত্রী এজহারে বলেছেন, “আমি শারীরিক মানসিকভাবে অসুস্থ থাকায় এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে আলোচনা করতে বিলম্ব হওয়ায় থানায় এসে এজহার দিতে বিলম্ব হয়েছে।”