স্বাস্থ্যের গাড়িচালক মালেক ১৪ দিনের রিমান্ডে

অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আবদুল মালেক ওরফে বাদলের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Sept 2020, 11:54 AM
Updated : 21 Sept 2020, 11:54 AM

ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম সোমবার শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তুরাগ থানার এসআই রুবেল শেখ আবদুল মালেককে আদালতে হাজির করে দুই মামলায় সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আবদুল মালেক স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের গাড়িচালক। এছাড়াও তিনি বাংলাদেশ সরকারি গাড়িচালক সমিতির সভাপতি হিসেবে ২০-২৫ বছর যাবৎ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি তার কর্মস্থলে খুবই প্রভাবশালী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ জাল টাকার ব্যবসাসহ নিজ কর্মস্থলে সাংগঠনিক পদবীকে কাজে লাগিয়ে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ বিত্ত-বৈভবের মালিক হন।

মামলার মূল রহস্য উদঘাটন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের উৎস, জাল টাকার উৎস, পলাতক আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম-ঠিকানা সংগ্রহসহ গ্রেপ্তারের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে আবদুল মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হোক।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু দুই মামলাতেই সাত দিন করে ১৪ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন।

আসামিপক্ষে জিএম মিজানুর রহমান রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন।

তিনি বলেন, “আইনে আসামিকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার কথা থাকলেও তাকে আদালতে হাজির করা হয়নি। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী গভীর রাতে কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এটা মানা হয়নি। পুলিশ যে আলামত উদ্ধারের কথা বলছে তা তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়নি।

“তাকে মামলায় সম্পৃক্ত করার কারণ, সে স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজির গাড়িচালক। এজন্য স্বাস্থ্য বিভাগের কিছু লোক তাকে মামলায় ফাঁসিয়েছে। এছাড়া আসামি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। শ্বাসকষ্টের রোগী। কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত ছিল। তাছাড়া তিনি একজন বয়স্ক লোক। আর যা উদ্ধার তা তো উদ্ধার হয়ে গেছে। তাকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসা করা হোক।”

উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক মালেককে রোববার অস্ত্র ও জাল টাকাসহ গ্রেপ্তারের পর তার শত কোটি টাকার সম্পদের খোঁজ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব।

র‌্যাব কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, তুরাগের দক্ষিণ কামারপাড়ায় ২টি সাততলা ভবন, একই এলাকায় একটি বিশাল ডেইরি ফার্ম, ধানমন্ডির হাতিরপুলে সাড়ে ৪ কাঠা জমিতে একটি নির্মাণাধীন ১০তলা ভবন ছাড়াও কলাবাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি ফ্ল্যাট রয়েছে মালেকের। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ অর্থও জমা আছে তার।

গ্রেপ্তারের সময় মালেকের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জাল নোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করার কথা বলা হয়েছে। এ ঘটনায় র‌্যাব-১ এর পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যান) আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।