মসজিদে বিস্ফোরণ: দগ্ধ একজন ‘লাইফ সাপোর্টে’

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে অগ্নিদগ্ধ যে তিনজন এখন হাসপাতালে রয়েছেন, তাদের একজনের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ‘লাইফ সাপোর্টে’ নেওয়া হয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2020, 02:14 PM
Updated : 20 Sept 2020, 02:24 PM

ফতুল্লার নিউ খানপুর ব্যাংক কলোনির মো. সিফাতকে (১৮) এখন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন।

ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন রোববার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বর্তমানে ভর্তি তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হলেও সিফাতের অবস্থা বেশিই খারাপ। তাকে লাইফ সাপোর্টে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।”

গত ৪ সেপ্টেম্বর ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় বিস্ফোরণে ৩৭ জন দগ্ধ হয়েছিলেন।

এদের মধ্যে ৩৩ জনের মৃত্যু ঘটেছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন একজন। সিফাতসহ বাকি তিনজন এখনও হাসপাতালে।

সিফাতের দেহের ২২ শতাংশ পুড়লেও শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় অবস্থা শঙ্কাজনক।

রোববার আইসিইউ কক্ষের ঠিক সামনে কপালে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখা যায় সিফাতের বাবা স্বপন মিয়াকে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল দুপুরে শেষ আমার বাবার সাথে কথা কইছিলাম। হঠাৎ কইরাই কথা বন্ধ হইয়া গেছে। কালকে আইসিইউতে একজন মারা গেছে, ওইটা দেইখাই মনে হয় আমার পোলা ঘাবড়ায়ে গেছে।”

“আজকে সকালে অবস্থা খারাপ দেইখা ডাক্তার আমার সাইন নিয়া ওরে লাইফ সাপোর্টে দিছে। আমার পোলা নাকি বাঁচবো না? আল্লাহর কাছে চাওয়া ছাড়া আমার আর কিছু করার নাই,” বলেই কান্নায় ভঙে পড়েন স্বপন।

শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। ফাইল ছবি

শরীরের ২৫ শতাংশ পোড়া নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি আমজাদের (৩৭) স্ত্রী তানজিলা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একে একে সবাই এই ঘরটার ভেতর থেকে মইরা বের হইতেছে। আমার স্বামীর অবস্থা আগের মতোই আছে। তার ডায়াবেটিস থাকাতে ঘা শুকাইতেছে না”।

শরীরের ৩০ শতাংশ পোড়া নিয়ে ভর্তি পটুয়াখালীর মো. কেনানের (২৪) অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় তাকে আইসিইউ থেকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।

শনিবার দুপুরেই তাকে ওয়ার্ডে আনা হয় বলে জানিয়েছেন কেনানের বাবা চুন্নু মিয়া।

কেনান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “অহন আগের চাইতে একটু ভালো লাগে। ডাক্তার কইছে নিয়ম কইরা চললে সুস্থ হইয়া যামু।”

বিস্ফোরণের বর্ণনা দিয়ে কেনান বলেন, “এশার নামাজ পইড়া বাইর হইয়া জুতা পায়ে দিতে নিছিলাম, এমন সময় পেছন থেইকা আগুনের হলকা আইসা আমার গায়ে লাগে।

“এরপর নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আমারে নিয়া যায়, কিন্তু ওইখানে চিকিৎসা ভালো না হওয়ায় এইখানে নিয়া আসে। “ভাবছিলাম আর বাঁচুম না হয়ত, উপরওয়ালার ইচ্ছায় এখনো বাঁইচ্চা আছি।”