তিতাসের ৪ প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ আইইবির

নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লার মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস গ্যাসের চার প্রকৌশলীকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়ায় ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দেশের প্রকৌশলীদের শীর্ষ সংগঠন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Sept 2020, 08:52 AM
Updated : 20 Sept 2020, 08:52 AM

রোববার সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাৎ হোসেন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “চারজন সম্মানীত প্রকৌশলীকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ব্যতিত এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন এজেন্সির তদন্তে এই সমস্ত প্রকৌশলীদের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ার পরও এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতিরেকে গ্রেপ্তার, দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ও হাতকড়া পরানো হয়েছে, যা সারাদেশের প্রকৌশলী সমাজে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

“আমরা এই ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই সমস্ত নির্দোষ প্রকৌশলীদের সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেনস্তা না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।”

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে এশার নামাজ চলাকালে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হন। তাদের ৩৩ জন ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আরও পাঁচজন এখনও চিকিৎসাধীন।

ওই ঘটনায় পরদিন তিতাস, ডিপিডিসি, মসজিদ কমিটির বিরুদ্ধে ‘অবহেলাজনিত মুত্যু সংঘটনের’ অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ মামলা দায়ের করে, যার তদন্ত করছে সিআইডি।

সেই মামলায় শনিবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে তিতাস গ্যাসের চার প্রকৌশলীসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

ওই আটজন হলেন- তিতাস গ্যাস ফতুল্লা অঞ্চলের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম (৪২), উপ-ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদুর রহমান রাব্বী (৩৪), সহকারী প্রকৌশলী এসএম হাসান শাহরিয়ার (৩২), সহকারী প্রকৌশলী মানিক মিয়া (৩৩), সিনিয়র সুপারভাইজার মুনিবুর রহমান চৌধুরী (৫৬), সিনিয়র উন্নয়নকারী আইউব আলী (৫৮), হেল্পার হানিফ মিয়া (৪৮) ও কর্মচারী ইসমাইল প্রধান (৪৯)।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে আইইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “আমরা পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশে সুনামের সাথে কর্মরত প্রকৌশলীরা বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও মানসিক অত্যাচার, গ্রেপ্তার রিমান্ড ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছেন।”

মসজিদে ওই ঘটনার পর প্রথমে এসি বিস্ফোরণের কথা বলা হলেও পরে গ্যাস জমে ওই দুর্ঘটনা ঘটার কথা বলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। ফায়ার সার্ভিস, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশনের তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে অনিয়ম ও গাফিলতির নানা তথ্য।

বিস্ফোরণের ঘটনায় তিতাস কর্তৃপক্ষ মসজিদের উত্তর পাশের সড়কের মাটি খুঁড়ে পরিত্যক্ত পাইপলাইনে ছয়টি ছিদ্র পায়। এরপর তিতাসের চার কর্মকর্তাসহ ৮ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আটজনকে গ্রেপ্তারের পর শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি মাঈনুল হাসান বলেন, মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় গাফলতি থাকায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাময়িক বহিষ্কৃত তিতাসের এই আট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আটক করা হয়েছে।

“মামলার তদন্তের কাজ অগ্রসর হয়েছে। তিতাসের কর্মকর্তাদের অবহেলার বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। মসজিদ কমিটির গাফলিত পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে এখনও তদন্ত চলছে।”