আদালতের আদেশ অনুযায়ী, ক্ষতিপূরণের এই টাকা পাবে নিহত জনির পরিবার। আর এই টাকা না দিলে জজ আদালতের দেওয়া যাবজ্জীবন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আপিল করার সুযোগ নেই।
এসআই জাহিদের আইনজীবী ফারুক আহম্মাদ বুধবার মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ক্ষতিপূরণের দুই লাখ টাকা জমা দেন।
পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ফারুক বলেন, “আমরা আদালতের নির্দেশে ক্ষতিপূরণের ২ লাখ টাকা জমা দিয়েছি। এখন আমরা সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করব।”
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশই গত ৯ সেপ্টেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এসআই জাহিদসহ তিন পুলিশ সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন তিনি। সেই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এসআই জাহিদ ছাড়া বাকি দুই পুলিশ সদস্য হলেন- পল্লবী থানার এএসআই রাশেদুল ইসলাম, এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু।
অর্থদণ্ড ছাড়াও দুই সপ্তাহের মধ্যে নিহতের পরিবারকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয় আসামিদের প্রত্যেককে। তখনই বলে দেওয়া হয়, ক্ষতিপূরণ না দিলে আপিল করা যাবে না।
২০১৩ সালের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে কোনো মামলায় দেশে এটাই প্রথম রায়। আর তিন পুলিশ সদস্যকে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, এ আইনে সেটাই সর্বোচ্চ সাজা।
২০১৪ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে মিরপুর-১১ নম্বর সেক্টরে ইরানি ক্যাম্পে বিল্লাল নামে এক ব্যক্তির গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান থেকে পল্লবী থানায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করা হয় জনির ওপর। অচেতন অবস্থায় তাকে ঢাকা ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই বছরের ৭ অগাস্ট ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে ‘নির্যাতন ও পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে’ এই মামলা দায়ের করেন জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি।
রায়ের পর্যবেক্ষণে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ বলেন, “ভিকটিমের তিনজন বন্ধু এ মামলার চাক্ষুষ সাক্ষী। তারা আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন, নির্যাতনের সময় ভিকটিম পানি চাইলে তার মুখে থুথু ছিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা কেবল আইনের বরখেলাপ নয়, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।”