৭ দিনেও খোঁজ মেলেনি টিএসসির পথশিশু জিনিয়ার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় ফুল বিক্রি করত নয় বছরের পথশিশু জিনিয়া। গত ৭ দিন ধরে তার কোনো খোঁজ নেই। মেয়েকে না পেয়ে দিশেহারা হয়ে দিন কাটাচ্ছেন মা সেনুরা বেগম।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2020, 06:09 PM
Updated : 7 Sept 2020, 06:09 PM

গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে সর্বশেষ জিনিয়াকে টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফটকে অপরিচিত দুজন নারীর সঙ্গে ফুচকা খেতে দেখেছিলেন সেনুরা বেগম। এরপর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরদিন বুধবার সেনুরা বেগম শাহবাগ থানায় গিয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অপরিচিত ওই দুই নারীকে ঘিরেই তার সন্দেহ।

সেনুরা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই দুই মহিলা বলছিল জিনিয়ারে তাদের দিয়ে দিতে, তারা নাকি আমার মেয়েকে ভালো খাওয়াবে, পড়াবে। কিন্তু আমি দেই নাই। আমি বলেছি, আমি ভিক্ষা করে আমার মেয়েকে খাওয়াব-পড়াব তারপরও আপনাদের  দিব না

“এরপর আমি জিনিয়াকে তাড়াতাড়ি চলে আসতে বলে ছোট মেয়ের কাছে যাই। কিন্তু জিনিয়া আর ফিরে আসে নাই।”

ওই নারীরা কারা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী না। বাহির থেকে এসে টিএসসিতে আড্ডা দিত, বিড়ি-সিগারেট খাইত। ছবি দেখলে আমি চিনতে পারব।”

মেয়েকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে সেনুরা বলেন, “আমার আর কিছু দরকার নেই। মেয়েটাকে পেলে আমি ঢাকা ছেড়ে চলে যাব।”

ট্রাকচালক স্বামী দুর্ঘটনায়  মারা যাওয়ার পর সাত বছর আগে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তিন সন্তানকে নিয়ে টিএসসি এলাকায় আসেন সেনুরা।

দুই মেয়ে সিনথিয়া (৭), জিনিয়া (৯) ও ছেলে পলাশকে (১৭) নিয়ে টিএসসি বারান্দায় রাত কাটান তিনি। দিনের বেলা ফুল বিক্রি করে মায়ের সংসারে জোগান দেয় জিনিয়া ও সিনথিয়া। আর পলাশ এখন একটা চায়ের দোকানে কাজ করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বা টিএসসিতে যাদের আনাগোনা, তাদের অধিকাংশেরই চেনা মিষ্টি হাসির দুই শিশু সিনথিয়া-জিনিয়াকে।

নিঁখোজ হওয়ার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা ফেইসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জিনিয়ার খোঁজে সরব হয়ে ওঠেছেন।

জিনিয়াকে খুঁজে বের করতে ‘সব রকমের চেষ্টা চলছে’ বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানা পুলিশ।

শাহবাগ থানার ওসি মামুন অর রশীদ সোমবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা সব রকমের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের থানা পুলিশ সবাই এটা নিয়ে কাজ করছে। আমরা কিছু আলামতও পেয়েছি। শিগশিগরই আমরা মেয়েটাকে খুঁজে বের করতে পারব বলে আশা করছি।”