বৃহস্পতিবার ঢাকার জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার শেষে চিকিৎসক বলেছেন, রোগীর পরিস্থিতি ‘আশাব্যঞ্জক’।
ইন্সটিটিউটের উপপরিচালক অধ্যাপক ডা. বদরুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, “অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হয়েছে। তবে অস্ত্রোপচার সাকসেস হয়েছে কি না, সেটা বলতে সময় লাগবে। সেটা আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।
“তবে আশার কথা হল, অপারেশন পূর্ববর্তী ও বর্তমান সব প্যারামিটার ভালো। এটা আশাব্যঞ্জক।”
রাত ৯টা ২০ থেকে ১১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত ওয়াহিদার অস্ত্রোপচার চলে।
“আমরা তাকে ৭২ ঘণ্টার অবজারভেশনে রেখেছি, এরপর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আমরা বলতে পারব,” বলেন ডা. বদরুল।
এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসে ইউএনওর বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা চালানো হয়।
এই হামলা কে বা কারা কেন চালিয়েছে, সে বিষয়ে কোনো ধারণা স্থানীয় পুলিশ কিংবা প্রশাসন দিতে পারেনি।
গুরুতর আহত ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার বিকালে হেলিকপ্টারে তাকে ঢাকার এনে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ওয়াহিদার বাবা ওমর আলীকে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নওগাঁ থেকে তিনি মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
ওয়াহিদার স্বামী মেজবাহুল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
ওমর আলী পুলিশকে বলেছেন, রাতে বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে কেউ একজন বাসায় ঢোকে। ওয়াহিদা টের পেয়ে এগিয়ে গেল তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় ওমর আলী এগিয়ে গেলে তাকেও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারী পালিয়ে যায়। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওসি বলেন, “ওই বাসা থেকে কোনো কিছু খোয়া যায়নি। এটি ডাকাতির চেষ্টা, না আক্রোশ থেকে কেউ হামলা করেছে, সেটা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।”
রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য ঘটনাস্থল থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখনও ঘটনা স্পষ্ট না। আমরা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে দেখছি। প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
এদিকে ইউএনও ওয়াহিদার উপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেছেন তার ভাই শেখ ফরিদ।
ঘোড়াঘাট থানার ওসি আমিরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে এই মামলাটি দায়ের করা হয়।
এই ঘটনায় থানা পুলিশ ছাড়াও র্যাব, ডিবি ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে জানিয়ে ওসি বলেন, “কয়েকজনকে আটক করে থানার বাইরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের মধ্যে কাউকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।”
তাদের পরিচয় না জানিয়ে ওসি বলেন, “গ্রেপ্তারের পর থানায় আনা হলে তাদের নাম জানা যাবে।”
এদিকে এই ঘটনার পর সারাদেশে ইউএনওদের বাড়ির নিরাপত্তায় আনসার মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।