সাবরিনাকে দ্বৈত ভোটারে ‘ভিআইপির প্রভাবের’ প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা: ইসি

ডা. সাবরিনা শারমিন হুসেন ওরফে সাবরিনা আরিফকে দ্বিতীয়বার ভোটার করায় প্রভাবশালী কারও সম্পৃক্ততা পেলে তার বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Sept 2020, 05:28 PM
Updated : 3 Sept 2020, 05:30 PM

নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় এই হুঁশিয়ারি দেন।

একাধিক জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের মামলায় ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে জেকেজি হেলথ কেয়ারের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির মামলায় কারাগারে রয়েছেন জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের বরখাস্ত এ চিকিৎসক।

ডা. সাবরিনাকে নিয়ে দুদকের অনুসন্ধানে তার দুটি জাতীয় পরিচয়পত্র থাকার তথ্য বেরিয়ে আসে, তারা জানানোর পর ইসি মামলা করে।

ডা. সাবরিনার অন্যায় কাজে ‘ভিআইপি’ কারও সহযোগিতা ছিল বলে অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে ইসি সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, “যদি কেউ অন্যায় চাপ প্রয়োগ করে তদবির করেন, বা যেটা করা যাবে না ওটার বিষয়ে চাপ দিয়ে বলেন এটা দিতে হবে, তবে সেটা অন্যায়। এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয়পত্র আইন অনুযায়ী উনিও একজন আসামি হবেন।”

ইতোমধ্যে ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ বিষয়টির তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

ইসি সচিব বলেন, “অনেক সময় ভিআইপিদের কাছে অনেকে কার্ড চান। কিন্তু কার্ডটা যে উনি নিয়ে কোথায় লাগাবেন সেটা তো ওই ভিআইপি জানেন না। এজন্য যারা সচেতন, তারা কার্ড দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকেন। যে কেউ কার্ড চাইলে দেন না।

“তিনি (ভিআইপি) যদি প্রভাব খাটিয়ে অন্যায় করেন। আর যদি দেখা যায় উনি প্রভাব খাটাননি, উনার রেফারেন্সে হয় এসেছেন। এক্ষেত্রে তদন্তে বের হবে উনি প্রভাব খাটিয়েছেন কি না। আইন সবার ক্ষেত্রে সমান।”

দ্বিতীয়বার ভোটার হওয়ার সাবরিনার আবেদনের সঙ্গে তৎকালীন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমানের একটি ভিজিটিং কার্ড যুক্ত করা ছিল বলে তথ্য মিলেছে।

অধ্যাপক  মিজানুর রহমান দুই মেয়াদে ২৩ জুন ২০১০  থেকে ২৩ জুন ২০১৬ দায়িত্ব পালন করেন।

ইসি সচিব বলেন, “গণমাধ্যমের  রিপোর্টে দেখলাম মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যানের কার্ড আবেদনের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে।… একটা কমিটি করে তদন্ত করতে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে আমরা বুঝতে পারব। আসলে কার্ড কি উনার কাছে চেয়েছিল, নাকি না বলে দিয়েছে।”

মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে সাবরিনাকে ভোটার করার বিষয়ে তদবিরের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।

তিনি দাবি করেছেন, তিনি ডা. সাবরিনাকে চেনেনও না, ইসিতে কখনও যানওনি।

ইসির দায়ের করা মামলার এজাহারের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটার হওয়ার জন্য আগারগাঁওয়ে এনআইডি উইংয়ের প্রকল্প অফিসে আবেদন করে আঙ্গুলের ছাপ ও বায়োমেট্রিক তথ্য দেন সাবরিনা। নিয়ম অনুযায়ী তার তথ্য যাচাইয়ের জন্য গুলশান নির্বাচন অফিসকে জানানো হয়। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে সে বছর ২৭ এপ্রিল সাবরিনা গুলশান নির্বাচন কাযালয়ে উপস্থিত হন।

দলিল যাচাই-বাছাই করে তদন্ত প্রতিবেদনে তৎকালীন নির্বাচন অফিসার তাকে ‘ভোটার করা যেতে পারে’ বলে সুপারিশ করেন। এর ভিত্তিতে সেবার ভোটার হন সাবরিনা।

সাবরিনা মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রথম ভোটার হয়েছেন; পরেরবার ভোটার হয়েছেন গুলশানে।ভিন্ন নম্বরের দুটি জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম একই থাকলেও জন্মতারিখ, স্বামী, ঠিকানা ভিন্ন।