আত্মসমর্পণ করে কারাগারে গেলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আবজাল

অবৈধ সম্পদ অর্জনের দুই মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মচারী আবজাল হোসেনের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছে ঢাকার একটি আদালত।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2020, 01:16 PM
Updated : 26 August 2020, 01:16 PM

আবজাল বুধবার ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে আইনজীবী শাহিনুর ইসলামের মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। দুদকের পক্ষে মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধীতা করেন।

শুনানির এক পর্যায়ে বিচারক কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আবজালকে তার পদ-পদবী কি জিজ্ঞেস করলে আসামি জানান, তিনি হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ।

তখন বিচারক বলেন, “আপনি তো কেরানি । তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী, কর্মকর্তা হলেন কী করে? বিচারকের সঙ্গেও মিথ্যা কথা বলেন।”

বিচারকের এ কথায় এজলাসে হাস্যরসের সৃষ্ট হয়।

শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৩ অগাস্ট আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন দিয়েও তুলে নিয়েছিলেন আবজাল হোসেন।

মামলা দুইটির মধ্যে একটিতে আবজাল হোসেন একা এবং অন্যটিতে তার স্ত্রী রুবিনা খানম যৌথভাবে আসামি।

গত বছর ২৭ জুন দুদকের উপ-পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ অবৈধ সম্পদ অর্জন, মুদ্রা পাচার এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দুটি করেন।

মামলা দুটিতে আবজাল দম্পতির বিরুদ্ধে ৩৬ কোটি ৩০ লাখ ৬১ হাজার ৪৯৩ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভোগদখলে রাখার অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে ২৮৪ কোটি ৫১ লাখ ১৩ হাজার ২০৭ টাকা পাচারের অভিযোগও আনা হয়েছে।

আবজালের বিরুদ্ধে করা মামলায় চার কোটি ৭৯ লাখ ৩৪ হাজার ৪৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তিনি দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে দুই কোটি দুই লাখ এক লাখ ১৯ হাজার ৭৮৫ টাকার সম্পদ গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

আর আবজাল-রুবিনার বিরুদ্ধে করা মামলায় ৩১ কোটি ৫১ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ টাকার অবৈধ সম্পদের কথা বলা হয়েছে। এই দম্পতি দুদককে দেওয়া হিসাব বিবরণীতে পাঁচ কোটি ৯০ লাখ ২৮ হাজার ৯২৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

মামলায় বলা হয়, আবজালের নামে থাকা সম্পদের চেয়ে তার স্ত্রীর সম্পদ বেশি। অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে তিনি স্ত্রীর নামে সম্পদ করেছেন। এসব সম্পদের বৈধ উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আবজালের নামে ২০ কোটি ৭৪ লাখ এবং রুবিনা খানমের বিরুদ্ধে ২৬৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।