দুদকের মামলায় আগাম জামিন পেলেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের প্রধান সম্পাদক

দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2020, 08:55 AM
Updated : 27 August 2020, 05:15 AM

‘অসাধু উপায়ে’ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদক গত ৩০ জুলাই এই মামলা করে, যে অভিযোগ বরাবরই তিনি অস্বীকার করে আসছেন।

তৌফিক ইমরোজ খালিদীর আবেদন মঞ্জুর করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোস্তাফিজুর রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার আট সপ্তাহের আগাম জামিনের আদেশ দেয়।

জামিন পাওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, এটা ‘সাজানো’ মামলা; এজাহারে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, তার ‘এক বর্ণও সত্য নয়’।

“মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য (এটা) করা হয়েছে।”

জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু, ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

তৌফিক ইমরোজ খালিদীর পক্ষে আদালতে আরও ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী, প্রকাশ বিশ্বাস, দেবাশীষ দেব, নোমান হোসাইন তালুকদার, মোহাম্মদ এহসান হাবিব।

২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭ (১) ধারায় দায়ের করা মামলাটির এজাহারে বলা হয়েছে, তৌফিক ইমরোজ খালিদী চারটি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে ৪২ কোটি টাকা জমা রেখেছেন, যার ‘বৈধ কোনো উৎস’ দুদক পায়নি।

‘ভুয়া কাগজপত্র সৃষ্টি করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় প্রতারণার মাধ্যমে’ তিনি ওই টাকা অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

দুদকের এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছিল গত বছরের শেষ ভাগে, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের কাছ থেকে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ পাওয়ার খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সংবাদ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করার সপ্তাহ দুই পর।

বিনিয়োগের ওই টাকাই ‘অবৈধ প্রক্রিয়ায়’ অর্জন করা হয়েছে বলে সাড়ে আট মাস পর দায়ের করা মামলায় অভিযোগ করেছে দুদক।

ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ইমরুল কায়েশ এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ৭ অক্টোবর দিন রেখেছেন।

দুদকের এই মামলা নিয়ে ইতোমধ্যে লেখক, গবেষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, অধিকারকর্মী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট থেকে শুরু করে নানা পেশার কয়েক হাজার মানুষ অনলাইনে সরব হয়েছেন।

তৌফিক ইমরোজ খালিদীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা এবং পূর্বাপর ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে, সেগুলো কেন আমলে নেওয়া হচ্ছে না, তা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারকদের কাছে জানতে চেয়েছেন তারা।

জামিন শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সামনে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু

যা বললেন আইনজীবীরা

জামিন শুনানি শেষে তৌফিক ইমরোজ খালিদীর আইনজীবী আব্দুল মতিন খসরু সাংবাদিকদের বলেন, “উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, উনার যে সম্পদ আছে তা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। উনার অ্যাকাউন্টে যে টাকা আছে সেটা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত। আমরা জবাব দিয়েছি, এটা ঠিক না। উনার বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে যে টাকা আছে তা বৈধ আয়ের।

“এখানে একটা টাকাও আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। এ বিষয়ে সংবিধান, আইনি যুক্তি তুলে ধরেছি। কোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে তাকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছে।”

অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, “আগাম জামিন দিয়েছে এটা আদালতের সিদ্ধান্তের ব্যপার। কিন্তু আমরা দেখিয়েছি আগাম জামিনের যে আবেদনটা করেছেন সেটি আপিল বিভাগের গাইডলাইন অনুযায়ী আসে না।”

কমিশনকে আগাম জামিনের বিষয়টি জানানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে আপিলে যাবে কি যাবে না।”      

কী আছে মামলায়?

গত ১৩ অক্টোবর এক প্রতিবেদনে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, তাদের কোম্পানিতে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশ। ওই বিনিয়োগের একটি বড় অংশ তারা ব্যয় করবে ডিজিটাল সংবাদ সেবার সম্প্রসারণ ও উদ্ভাবনে।

কিন্তু পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তাৎক্ষণিকভাবে ওই ‘বিনিয়োগ ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত কার্যক্রম থেকে বিরত’ থাকার নির্দেশ দেয়। তার দুই সপ্তাহের মাথায় দুর্নীতি দমন কমিশন ‘জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অবস্থান গোপনের’ অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদী ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের বিরুদ্ধে ‘অনুসন্ধান’ শুরু করে।

দুদকের চিঠি পেয়ে গত ২৬ নভেম্বর কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে নিজের বক্তব্য জানিয়ে আসেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী। এরপর তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ‘অবরুদ্ধ’ করা হয়, মামলা করা হয় গত ৩০ জুলাই।

সেই এজাহারে বলা হয়েছে, তৌফিক ইমরোজ খালিদী তার নামে থাকা কোম্পানির ২০ হাজার শেয়ার ২৫ কোটি টাকায় এবং আরও ২০ হাজার নতুন শেয়ার ইস্যু করে ২৫ কোটি টাকায় এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের সিইও রিয়াজ ইসলামের কাছে বিক্রি করেছেন।

অভিযোগে বলা হয়েছে, ওই ৪০ হাজার শেয়ারের ‘প্রকৃত মূল্য ৪০ লাখ টাকা’। কিন্তু ১২ হাজার ৪০০ টাকা প্রিমিয়ামসহ প্রতিটি শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে ১২হাজার ৫০০ টাকায়।

“তৌফিক ইমরোজ খালিদীর ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ব্র্যাক-ইপিএলকে দিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের অ্যাসেট ভ্যালুয়েশন করিয়েছেন। ব্র্যাক-ইপিএলের প্রতিবেদন অনুসারে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভ্যালুয়েশন ধরা হয়েছে ৩৭১ কোটি টাকা।”

কিন্তু ওই প্রতিবেদন ‘ভুয়া’ ছিল অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়েছে, ওই ৫০ কোটি টাকার মধ্যে ৪২ কোটি টাকা এইচএসবিসি, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড, সাউথ ইস্ট ব্যাংক লিমিটেড এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন হিসাবে জমা করা হয়েছে।

“তৌফিক ইমরোজ খালিদী উক্ত অস্থাবর সম্পদ অসাধু উপায়ে অর্জন করেছেন, যা তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।”

কার চাপে?

জামিন আবেদনের শুনানি শেষে সাংবাদিকরা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তৌফিক ইমরোজ খালিদী সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের ওই অভিযোগ তাকে ‘হতবাক’ করেছে, ‘বিস্মিত’ করেছে।

“আপনি অভিযোগটার দিকে তাকিয়ে দেখেন, ওই এফআইর ভুলে ভরা। তথ্যের দিক থেকে ভুলে ভরা। একটি বর্ণ সত্যি কথা নাই সেখানে।”

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, এ মামলায় দুটো অভিযোগ আছে। একটি হল ‘অসাধু উপায়ে’ টাকা অর্জন, অন্যটি হল ব্র্যাক-ইপিএল নাকি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘কোনো ভ্যালুয়েশনই করেনি’।

তিনি বলেন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভ্যালুয়েশন রিপোর্ট তৈরি করে দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল ব্র্যাক-ইপিএলের সঙ্গে একটি এনডিএ (নন ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়। এরপর ব্র্যাক-ইপিএলের এমডি ও সিইওর সাথে বহু বৈঠক এবং চিঠি চালাচালি চলে।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছ থেকে বিভিন্ন নথিপত্র নিয়ে প্রথম যে ইনফরমেশন মেমোরেন্ডামটি (আইএম) ব্র্যাক-ইপিএল তৈরি করে পাঠায়, যেখানে কোম্পানির প্রতিটি শেয়ারের ভ্যালুয়েশন হয় ৩৭ হাজার ১০০ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির ভ্যালুয়েশন হয় ৩৭১ কোটি টাকা।

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্র্যাক-ইপিএল একটি হালনাগাদ রিপোর্ট দেয়, তা নিয়ে সে সময় দুটো বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে বিনিয়োগের বিষয়ে আলোচনা চলে বলে জানান তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

তিনি বলেন, “প্রায় ঠিকঠাকই হয়ে গিয়েছিল,… বিভিন্ন কারণে হয়নি। একটি কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত পরে প্রত্যাহার করে নেয়। আমাদের কোম্পানিতে বিনিয়োগ করতে চেয়েছিল, কিন্তু বাংলাদেশে তারা বিনিয়োগ করতে চায়নি।

“একটি কোম্পানির কথা আমি বলতে পারি …, সেইখানে আলোচনার সময় ব্র্যাক-ইপিএল রাজিও হয়েছে তাদের সাথে আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে। নিউ ইয়র্ক ভিত্তিক যে প্রতিষ্ঠানের সাথে আমাদের কথা হয়েছিল, তাদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য তারা রাজি হয়েছে।”

“মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য, আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য (এটা) করা হয়েছে,” বলেছেন তৌফিক ইমরোজ খালিদী।

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (ব্র্যাক-ইপিএল) যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেখানে কিন্তু তারা স্বীকার করেছে তারা ভ্যালুয়েশন করেছে। কিন্তু দুদকের কাছে তারা বেমালুম অস্বীকার করেছে। কার চাপে করেছে?

“আমার প্রশ্ন হচ্ছে, কারা এত ক্ষমতাশালী হয়ে উঠল যে রাষ্ট্রের চেয়ে ক্ষমতাশালী হয়ে গেছে। তারা এরকম চাপ দিতে পারে যে একজন লোককে মিথ্যা স্টেটম্যান্ট দিতে হয়!”

‘অসাধু উপায়ে’ টাকা অর্জনের যে অভিযোগ মামলায় করা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “(এজাহারে) বলা হয়েছে, ৪২ কোটি টাকা আমার অ্যাকাউন্টে পাওয়া গেছে। ৪২ কোটি টাকা (আমার অ্যাকাউন্টে) পাওয়া যেতে পারে না।”

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ২০ হাজার শেয়ার এবং তার নামে থাকা কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২০ হাজার শেয়ার এলআর গ্লোবাল বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করা হয় মোট ৫০ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ২৫ কোটি টাকা তার অ্যাকাউন্টে এবং ২৫ কোটি টাকা কোম্পানির অ্যাকাউন্টে জমা হয়।

“কোম্পানির ২৫ কোটি টাকা থেকে বেতন দেওয়া হয়েছে… ১৮ কোটি টাকা বাকি ছিল, সেই ১৮ কোটি টাকা এফডিআর করা হয়েছে। আর আমার কিছু ধার-টার ছিল, সবগুলো পরিশোধ করে ২৪ কোটি টাকা আমি রেখে দিয়েছি এফডিআর করে।”

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “কেন রেখে দিয়েছি? কোম্পানি বিপদে পড়লে আমি যেন টাকা দিতে পারি। তার প্রমাণ আমি রেখেছি। গত কয়েক মাসে যখন খুব বিপদ ছিল, তখন আমার ওই এফডিআর থেকে যে সুদ পেয়েছি, সেটা থেকে কিন্তু আমি বেতন দিয়েছি।”

যেখানে নামি অনেক পত্রিকা শতকরা ২৫ ভাগ উৎসব ভাতা দিয়েছে, সেখানে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ঈদে শতভাগ উৎসবভাতা দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “কীভাবে দিয়েছি? আপনারা খোঁজ করে দেখেন, ব্যাংকের লেনদেন সব ট্রান্সপারেন্ট।

“বাংলাদেশের ব্যাংক থেকে আমাদের ব্যাংকে টাকা এসেছে। কোথায় লুকানো হল? আমরাই প্রথম (বিনিয়োগ পাওয়ার) খবর দিয়েছি, কোথায় লুকানো হল? প্রত্যেকটা টাকার ওপর ট্যাক্স দেওয়া হয়। এই টাকার উপর ট্যাক্স দিতে হবে এই অর্থবছরে, নভেম্বরের মধ্যে…। সে টাকাও তো আমি দিতে পারব না।”

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “এটা ওরা সবাই জানে… কোনো কিছু লুকানো হয়নি। আমরা কোনো কিছু লুকাই না। আমার সম্পর্কে যা কিছু বাজে খবর হয়েছে, প্রত্যেকটা সবার আগে কারা ছেপেছে? বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ছেপেছে।

“কি হয় সাধারণত? নিজেদের সম্পর্কে খারাপ খবর হলে লুকানোর চেষ্টা করা হয়। অবশ্যই আমার কোনো কিছু লুকানো হয়নি। আমার কোন অ্যাকাউন্টে, দেশে-বিদেশে কোথায় কোন জায়গায় কয় টাকা আছে, সেটা আমার যে অ্যাকাউন্ট-ফাইন্যান্স দেখে, ওরা সবাই জানে। আমার চেয়ে বেশি জানে।”

কোন পরিস্থিতিতে শেয়ার বিক্রি করতে হয়েছে, তা তুলে ধরতে গিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রধান সম্পাদক বলেন, “দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আমি বেতন নিতে পারিনি। ৩৪ মাস আমি বেতন নিইনি। একসাথে আমার বেতনগুলো এসেছে। সেটা দেখে দুদকের অফিসার আমাকে জিজ্ঞেস করেছে যে, ‘এত টাকা কোত্থেকে পেলেন’।

“সাথে সাথে উত্তর দিয়েছি, আমি এত মাসের বেতন একসাথে পেয়েছি। এত মাস এতদিন। তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করেছে, ‘আপনার কোনো বাড়ি নাই? কোনো ফ্ল্যাট-প্লট নাই?’ তিনবার চারবার জিজ্ঞেস করেছে। আমি বলেছি- নাই।

তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “কে টাকা দিয়ে কী করবে সেটা মানুষের জীবন দর্শনের ব্যাপার। কেউ জমি কিনবে, কেউ ফ্ল্যাট কিনবে। সে অনিশ্চয়তায় আমি কখনো ভুগিনি। (কিন্তু) এখন ভুগছি, যখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। আমার শরীর খারাপ হয়েছে, আমার চোখ নষ্ট হয়েছে।”

দুদকের মামলায় তোলা সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আসলে এটা সাজানো হয়েছে। কারা করেছে- এরা তাও জানে। কি জন্যে করেছে তাও জানে। আমরা পাঁচটি স্টোরি করেছিলাম কোনো এক তরুণ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। তিনি ক্ষেপে গেছেন। তিনি অসম্ভব ক্ষমতাশালী হয়ে উঠেছেন।”

এ সময় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরুকে দেখিয়ে তৌফিক ইমরোজ খালিদী বলেন, “যারা তুখোড় রাজনীতিক, বহুদিন ধরে রাজনীতি করেন এবং অন্যান্য যারা আছেন, তাদের সবার চেয়ে বেশি ক্ষমতাশালী (সেই তরুণ ব্যবসায়ী)!

“আরেকজন ব্যবসায়ী আছেন তিনি তো সবার চেয়ে ক্ষমতাশালী। যে করেই হোক এটা নিয়ে নিতে চান। যে কোনো মূল্যে এটা নিতে চান। আমরা বলেছি না, এটার মালিকানা কাগজে-কলমে যারই থাকুক না কেন, এখানে যারা কাজ করে তাদের। আপনি যদি কথা বলেন, তারা সাক্ষী দেবে।”