করোনাভাইরাস: মৃত্যু ছাড়াল ৪ হাজার, শনাক্ত রোগী ৩ লাখ ছুঁইছুঁই 

দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার ১৭১ দিনের মাথায় সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়ে গেল, শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছুঁই ছুঁই করছে তিন লাখের ঘর।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2020, 09:58 AM
Updated : 25 August 2020, 11:12 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতে এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার ২৮ জন।

গত এক দিনে আরও ২ হাজার ৫৪৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে। তাতে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৮ জনে।

আইইডিসিআরের হিসাবে গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি ও বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নেওয়া রোগীদের মধ্যে আরও ৩ হাজার ৮৮১ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে সুস্থ রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে।

মঙ্গলবার বিকালে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য জানানো হয়।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর খবর আসে।

প্রায় এক মাস পর ২০ এপ্রিল মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছিল। তা ৫০০ ছাড়ায় গত ২৫ মে। এরপর ১০ জুন মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়ায়। দেড় হাজার ছাড়ায় ২২ জুন।

করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর ৮৫ দিন পর ৫ জুলাই মৃতের সংখ্যা দুই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায়। এরপর তা আড়াই হাজারের ঘর ছাড়িয়ে যায় ১৭ জুলাই।

২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে; ১২ অগাস্ট পৌঁছায় সাড়ে তিন হাজারে। তারপর ১৩ দিনের মাথায় মঙ্গলবার মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ছাড়িয়ে গেল।

এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ পেরিয়েছিল গত ৭ অগাস্ট। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৫তম স্থানে। তার মৃতের সংখ্যায় বাংলাদেশ রয়েছে ২৯তম অবস্থানে। 

মৃত্যুর সংখ্যায় বৃদ্ধি

সময় লেগেছে

০-৫০০ জন

২ মাস ৭ দিন

৫০০-১০০০ জন

১৬ দিন

১০০০-১৫০০ জন

১২ দিন

১৫০০-২০০০ জন

১৩ দিন

২০০০-২৫০০ জন

১২ দিন

২৫০০-৩০০০ জন

১১ দিন

৩০০০-৩৫০০ জন

১৫ দিন

৩৫০০-৪০০০ জন

১৩ দিন

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৯১টি ল্যাবে ১৪ হাজার ১৫৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৪ লাখ ৭০ হাজার ১৯১টি নমুনা।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬২ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

 

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন, নারী ১৩ জন। তাদের মধ্যে ৪৪ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন।

তাদের মধ্যে ২৭ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ১০ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

২৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ২ জন বরিশাল বিভাগের, ১ জন রংপুর বিভাগের এবং ২ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৪ হাজার ২৮ জনের মধ্যে ৩ হাজার ১৬৯ জনই পুরুষ এবং ৮৫৯ জন নারী।

তাদের মধ্যে ১ হাজার ৯৭৪ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ হাজার ১১৫ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৫৩৯ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২৫০ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ৯৬ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৩৫ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ১৯ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম।

এর মধ্যে ১ হাজার ৯৪৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৮৮৯ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২৭২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৩২৬ জন খুলনা বিভাগের, ১৫৭ জন বরিশাল বিভাগের, ১৮৪ জন সিলেট বিভাগের, ১৬৮ জন রংপুর বিভাগের এবং ৮৭ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

পুরনো খবর