হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের মূলধন বাড়ছে

অনুমোদিত ও পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ বাড়িয়ে হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন অধ্যাদেশ সংশোধন করে নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2020, 12:41 PM
Updated : 14 June 2021, 08:34 AM

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘দ্য বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন অর্ডার ১৯৭৩’ এর সংশোধন প্রস্তাবের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “খসড়া আইনে সেবার আওতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অথরাইজড ক্যাপিটাল ও পেইডআপ ক্যাপিটাল বাড়ানো হচ্ছে।

“অথরাইজড ক্যাপিটাল এক হাজার কোটি টাকা এবং পেইডআপ ক্যাপিটাল ৫০০ কোটি টাকা করা হচ্ছে। আগে এটা অনেক কম ছিল।”

২০১৯ সালের ২৬ অগাস্ট এই আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রিসভা। সেদিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, অধ্যাদেশে ১১০ কোটি টাকা করে অথরাইজড ও পেইডআপ ক্যাপিটাল ছিল।

আনোয়ারুল বলেন, অথরাইজড ও পেইডআপ ক্যাপিটাল বাড়লে প্রতিষ্ঠানটির কাজের পরিধি অনেক বেড়ে যাবে, অনেক বেশি কাজকর্ম করতে পারবে।

এছাড়া অপরাধের শাস্তির পরিমাণ বাড়িয়ে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর পর্যন্ত জেল ও পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছিলেন, করপোরেশনের লিখিত সম্মতি ছাড়া যদি কেউ নাম প্রসপেক্টাসে বা বিজ্ঞাপনে ব্যবহার করেন তাহলে তার জন্য শাস্তি আগে ছয় মাস ছিল এবং এক হাজার টাকা জরিমানা ছিল। সেখানে প্রস্তাব করা হয়েছে ছয় মাস কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।

ব্যাংকারস বই আইন

‘ব্যাংকারস বহি স্বাক্ষ্য আইন ২০২০’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

১৮৯১ সালে ব্যাংকার বুক এভিডেন্স অ্যাক্ট ছিল জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রাচীন এই আইনটি নতুন করে করা হচ্ছে। আগের আইনটি বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে।

“আগের আইনের অনেক কিছু বর্তমান বাস্তবতার সাথে মিল খাচ্ছিল না। ব্যাংকের ডিজিটাল পদ্ধতি এখন শুরু হয়েছে, যেগুলো ওই আইনের মধ্যে ছিল না। ডিজিটাল পদ্ধতিগুলো কীভাবে কভার করা যায়। তথ্য প্রকাশের অনুমতির ক্ষেত্র ও আদালতের এখতিয়ার নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

“আগে ব্যাংকের কোনো তথ্য প্রকাশ করা হত না। এখন কিছু ওপেন করা হয়েছে। একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য বাদে অনেক কিছুই প্রকাশ করা হচ্ছে, কারা প্রকাশ করতে পারবেন সেটাও বলে দেওয়া হয়েছে। কিছু অপরাধের শাস্তি ও বিচারের কথা বলা হয়েছে।”

বিশ্বায়নের যুগে দ্রুত গতিতে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে উন্নতির জন্য আইসিটিভিত্তিক ব্যাংকিং এবং ই-ব্যাংকিংয়ের সব কিছুই এই আইনের আওতায় করা যাবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আইনটির খসড়া আইন মন্ত্রণালয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মতামত দেওয়ার পর এটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার মন্ত্রিসভায় আসবে বলেও জানান তিনি।

২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে হাই কোর্ট অবজারভেশন দেয় যে, সামরিক শাসনামলে যে অধ্যাদেশগুলো হয়েছে তার মধ্যে যেগুলোর প্রয়োজন আছে সেগুলো আইনে পরিণত করতে হবে, আর যেগুলোর প্রয়োজন নেই তা বাতিল করতে হবে।

১৯৭২-১৯৭৫ সালের আইন নতুন করে নয়, সংশোধন হবে

১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত যেসব আইন হয়েছে সেগুলোকে নতুন আইনে রূপান্তর না করে সংশোধন করতে হবে বলে অনুশাসন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে ১৯৭৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত যে আইনগুলো এখন থেকে পরিবর্তন হবে, সেগুলো নতুন আইন হবে না, আগের আইন সংশোধন হবে।

“কারণ স্বাধীনতার পরে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সরকার ছিল তখন রাষ্ট্র ব্যবস্থাপনা কেমন ছিল সেটা ভবিষ্যতে এই আইনগুলো যদি হারিয়ে যায় তাহলে পুরোপুরি বোঝা যাবে না।

“এই আইন কার্যকর থাকলে যারা গবেষণা করবেন বা রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করবেন তারা কিন্তু আইনগুলো পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন রাষ্ট্রের কাঠামো কীভাবে ডেভেলপ করা হয়েছিল এবং প্রশাসন কীভাবে পরিচালনা করা হয়েছিল।”

১৯৭৫ সালের অগাস্ট পর্যন্ত যত আইন মন্ত্রিসভায় আসবে সেগুলো সংশোধনী হিসেবে আনতে হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।