কোভিড-১৯ পারিবারিক সহিংসতা বাড়িয়েছে বহু গুণে: স্পিকার

কোভিড-১৯ মহামারীতে পারিবারিক সহিংসতা বহু গুণে বেড়ে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে  নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 August 2020, 01:35 PM
Updated : 20 August 2020, 01:35 PM

বুধবার রাতে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত পঞ্চম ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব স্পিকার্স অব পার্লামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘মেকিং জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড দ্য এম্পাওয়ারমেন্ট অব ওমেন অ্যান্ড গার্লস আ রিয়েলিটি: বেস্ট প্রাকটিসেস অ্যান্ড পার্লামেন্টারি কমিটমেন্টস’ এর ওপর প্রতিবেদন উপস্থা্পন করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

ওই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি বলেন, “বিশ্বব্যাপী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেয়েরা বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারী নারীদের বিরুদ্ধে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাকে তরান্বিত করেছে। এই মহামারী পারিবারিক সহিংসতাকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহু গুণে। বাল্যবিবাহ ও সহিংসতার আশু প্রতিকারকল্পে সমন্বিত প্রচেষ্টার পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া ও স্থানীয় অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটানো জরুরি।”

তিনি আরও বলেন, “লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সংসদ পর্যবেক্ষণশীল ও কার্যকর ভূমিকা রাখার পাশাপাশি সংসদীয় চর্চার মাধ্যমে এই সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান জরুরি। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার হয়রানির অবসান ঘটাতে এর অনুকূলে আইন প্রণয়ন করতে হবে। নারী ও শিশুদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করতে হবে।”

শিরীন শারমিন বলেন, মহামারী কোভিড-১৯ পরবর্তী অবস্থায় বিশ্বের সব মানুষের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের উপর বিপুল প্রভাব মোকাবেলায় উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে বের করতে সাহায্য করছে এই কনফারেন্স।

মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে ১৪টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ পর্যালোচনা করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জানিয়েছে, এই তিন মাসে দেশে ৪৮০ জন নারী ও শিশু সহিংসতার শিকার হয়েছেন, ধর্ষিত হয়েছেন ২৮০ জন।

দুই মাসের বেশি সময় লকডাউনে ঘরবন্দি থাকার দিনে মানুষের সহিংস আচরণের প্রভাব নারী ও শিশুদের উপরই বেশি পড়ছে বলে উদ্বেগ জানিয়েছে সংগঠনটি।

এই সময়ে সহিংসতার শিকার হওয়া ৪৮০ জনের মধ্যে ২৬৭ জন নারী ও ২১৩ জন শিশু। আর ধর্ষিত হয়েছেন ১১৬ জন শিশু ও ৯০ জন নারী।

অনুষ্ঠানে কেনিয়ার স্পিকার কেনেথ লুসাকা ও রুয়ান্ডার স্পিকার ডোনেটিল মুকাবালিসা রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েলা চুয়েভাস ব্যারন, অস্ট্রিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ওফগ্যাং সবতকা ও জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংসদীয় প্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, রওশন আরা মান্নান, অপরাজিতা হক, রুমানা আলী ও পীর ফজলুর রহমান জাতীয় সংসদ ভবনের শপথ কক্ষ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।