কোভিড-১৯ হাসপাতাল কমানোর চিন্তা

অনেক শয্যা খালি পড়ে থাকায় এ মাসের শেষ দিকে করোনাভাইরাস চিকিৎসায় নিবেদিত হাসপাতালের সংখ্যা কমানোর চিন্তা করছে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 August 2020, 07:19 AM
Updated : 14 August 2020, 07:19 AM

এজন্য হাসপাতালগুলোর একটি তালিকা তৈরির কাজ চলছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমরা চিন্তা করছি কিছু কোভিড হাসপাতাল কমিয়ে দেব। কারণ আমাদের হিসাবে দেখা গেছে, হাসপাতাল ৬০ থেকে ৫৪ ভাগ সিট খালি থাকে।

“এছাড়া যেসব হাসপাতালে কোভিড ও সাধারণ- এই দুই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হয়, সেখানেও রোগীরা আসতে চায় না। এ কারণে তারা চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”

পর্যায়ক্রমে কোভিড ও নন-কোভিড এই দুই ধরনের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এমন হাসপাতাল থেকেও কোভিড ইউনিট তুলে নেওয়া হবে।

ঢাকার হাসপাতাগুলো দিয়ে শুরু হলেও পর্যায়ক্রমে দেশের সব জায়গায় এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতালের মধ্যে কয়েকটিকে সাধারণ চিকিৎসার জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এছাড়া যেসব হাসপাতালে কোভিড ইউনিট আছে সেখান থেকেও কিছু ইউনিট তুলে দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, প্রাথমিকভাবে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, শেখ হাসিনা জাতীয় প্লাস্টিক সার্জারি ও বার্ন ইনস্টিটিউট, ঢাকা মহানগর হাসপাতাল, পুলিশ হাসপাতাল, শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, লালকুঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, হলিফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে কোভিড চিকিৎসা তুলে নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কিছু হাসপাতালকে কোভিড-১৯ চিকিৎসার জন্য মহামারীর শেষ পর্যন্তও রাখা হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনায় জড়িত চিকিৎসকসহ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

চীনে নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হলে প্রস্তুতি হিসেবে এ বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে কোভিড-১৯ বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্ধারণ করে সরকার। শুরুতে সেখানে কোভিড-১৯ সন্দেহজনক রোগীদের ভর্তি করা হতো।

পরে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ কয়েকটি সরকারি হাসপাতালকে কোভিড বিশেষায়িত হাসপাতাল ঘোষণা করে সরকার। রোগীর পরিমাণ বাড়তে থাকায় কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালকেও অনুমোদন দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

পরে গত ২৪ মে দেশের সব সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। সেই নির্দেশনা বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, মেডিকেল কলেজ ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের কাছেও পাঠানো হয়।

তবে হাসপাতাল বাড়লেও তাতে রোগীর পরিমাণ কমতে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১৩ অগাস্টের হিসাবে ঢাকায় ২২টি কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের ৭ হাজার ৫২টি শয্যার মধ্যে খালি আছে ৪ হাজার ৮২১টি এবং ৩০৫টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে তবে রোগীরা ১০৪টি খালি আছে। চট্টগ্রামে ৯টি কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালের ৭৮২টি শয্যার মধ্যে ৫১৩টি এবং ৩৯টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ২৬টি খালি আছে।

সব মিলিয়ে সারাদেশে ১৫ হাজার ২৭০টি সাধারণ শয্যার ২০ হাজার ৯২২টি এবং ৫৪৩টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ২৩৬টি খালি আছে।