সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার ভাবনা আছে: গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও এবছর প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা থেকে এখনও সরে আসেনি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 August 2020, 12:29 PM
Updated : 12 August 2020, 12:29 PM

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে, তার ওপর ভিত্তি করে তিনটি বিকল্প মাথায় রেখে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে আগামী সপ্তাহে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন।

তছাড়া প্রাথমিক সমাপনীর বদলে আপাতত ‘অটো পাসের’ চিন্তা নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার সচিবালয়ে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছেই। এই পরীক্ষাটা নিতে হলে আমাদের পাঠদানের যে সময় আছে সেই সময়টা পাচ্ছি না।

“আমরা সেপ্টেম্বরের দিকে যদি স্কুল খুলে দিতে পারতাম তাহলে শর্ট সিলেবাসে একটা পরীক্ষা (প্রাথমিক সমাপনী) নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা ছিল। আমরা শর্ট সিলেবাস করে পরীক্ষাটা নেব, না হলে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হবে না। আবার যদি তা না (সেপ্টেম্বরে না খোলে) হয়, অক্টোবরের দিকে খোলে তাহলে ৫০ নম্বরের পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারি কিনা, যদি সম্ভব হয় তাহলে এমসিকিউ করতে পারি ৫০ নম্বরের। এগুলো আমাদের চিন্তা-ভাবনা। পরীক্ষা (প্রাথমিক সমাপনী) আমরা রাখব, পরীক্ষার কোনো বিকল্প নাই।

“এখন যেহেতু সেপ্টেম্বরে স্কুল খুলতে পারব কিনা, তা বলতে পারছি না। অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে খুললে তখন কী অবস্থা হবে- আমরা একটা মূল্যায়নের ভিত্তিতে স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি।”

অক্টোবরেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান না খুললে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অক্টোবরে না খুললে নভেম্বরে খুলবে, নভেম্বরে না খুললে তখন বিকল্প ব্যবস্থা নেব।”

তবে সেই বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানাননি প্রতিমন্ত্রী।

সমাপনী পরীক্ষার বদলে ‘অটো পাসের’ কথা শো যাচ্ছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাকির হোসেন বলেন, “এরকম কোনো চিন্তা-ভাবনা আমাদের নেই, অটো পাসের চিন্তা নেই। এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি যে পরীক্ষা নেওয়া হবে না, এরকম হুট করে বলা যায় না।

“অটো পাসের বিষয়টা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের ওখানে আমাদের মাধ্যমিকের সচিব এবং আমাদের সিনিয়র সচিব কথা বলেছেন, এটা নিয়ে আলোচনা করেছেন যে এরকম কিছু করা যায় কিনা।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিশেষজ্ঞ আছে, অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন, আমরা তাদেরকে নিয়ে বসে একটা ডিসিশন দেব। আমরা যাই করি আমাদের অভিভাবক আছেন, আমরা সারসংক্ষেপ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠাব। উনি যেটি অনুমোদন করে দেবেন, আমরা সেটি বাস্তবায়ন করব প্রাথমিক সমাপনী নিয়ে তিনটি পরিকল্পনার সারসংক্ষেপ আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।”

পঞ্চম শ্রেণির নিচের ক্লাসের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের বার্ষিক পরীক্ষা হবে স্কুলে স্কুলে।

মহামারীর কারণে এবছর পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষা বাতিল করতে আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠানোর কথা মঙ্গলবার গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আকরাম-আল-হোসেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেছিলেন, মুখ্য সচিবের সঙ্গে তিনজন সচিবের (প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ) একটি সভা হয়েছে, সেখানে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

“ওই সভার প্রেক্ষিতে আমাদের এ বিষয়ে প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়েছে, আমরা সারসংক্ষেপ তৈরি করেছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও সারসংক্ষেপ তৈরি করছে। আগামী রবি-সোমবারের মধ্যে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।”

আর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দুই সমাপনী পরীক্ষা না হলেও স্কুল খোলা গেলে পঞ্চম ও অষ্টমের বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ওই পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতেই এ দুই শ্রেণিতে বৃত্তি দেওয়া হবে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা আছে।