সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ১১২ পৃষ্ঠার আদেশে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের ভার্চুয়াল বেঞ্চ পূর্ণাঙ্গ আদেশে এই পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।
আদালত আদেশে বলেছে, “সুপ্রিম কোর্টের আইন, বিধি ও জারি করা ভার্চুয়াল কোর্টের প্র্যাকটিস নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বাইরে অবস্থান করে আদালতে কোনো আইনজীবীর শুনানি বা যুক্তি উপস্থাপনেরও সুযোগ নেই।”
গত ২০ জুলাই লন্ডন থেকে আইনজীবী আজমলুল হোসেন কিউসি দুই ভাই রন সিকদার ও দিপু শিকদারের জামিন আবেদনের পক্ষে বলেছিলেন, তারা (দুই ভাই) এখন ব্যাংককে অবস্থান করছেন।
পরে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ দুই ভাইয়ের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়।
দেশের বাইরে থেকে ‘অবৈধ আবেদন’ করে আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য সেদিন আদালত দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে ১০ হাজার ‘ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই)’ জমা দিতে বলে।
আগাম জামিন আবেদনকারীকে শারীরিকভাবে আদালতে হাজির থাকতে হবে বা আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে উপস্থিত থাকতে হবে, তা মনে করিয়ে দিয়ে এ সংক্রান্ত আইনের অপব্যবহারের প্রশ্নে আইনজীবীকে সেদিন সতর্কও করেছিল আদালত।
যদিও আইনজীবী আজমালুল হোসেন ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার আইন ২০২০’র ৩(২) ধারা উল্লেখ করে দাবি করেছিলেন, বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে যে কোনো আইনজীবী বা পক্ষ ভার্চুয়াল শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন।
এদিকে হাই কোর্টের এ আদেশ ও পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করার অনুমতি চেয়ে দুই ভাইয়ের পক্ষে গত ২৭ জুলাই একটি আবেদন (হলফনামা দায়েরে অনুমতি চেয়ে আবেদন) সংশ্লিষ্ট শাখায় করা হয়।
আবেদনটি পরদিন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য উঠলে ভার্চুয়াল আদালতের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠান।
সে ধারাবহিকতায় রোববার আবেদনটি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় আসে।
কিন্তু আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি সময়ের আরজি জানালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ দুই সপ্তাহের জন্য শুনানি মুলতবি রাখে।
ন্যাশনাল ব্যাংকের পরিচালক রন ও দিপুর বিরুদ্ধে এক্সিম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ হায়দার আলী মিয়া এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ফিরোজ হোসেনকে অপহরণ করে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে গত ১৯ মে গুলশান থানায় মামলা হয়।
এরপর গত ২৫ মে সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে দুই ভাই ব্যাংককে পাড়ি জমান বলে খবর আসে।
দুই ভাইর বিদেশে পাড়ি জমানোর খবরে ব্যাপক আলোচনার মধ্যে ওই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রন সিকদারের একটি গাড়ি জব্দ করে।