বিশ দিনে আরও ৫০ হাজার কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত

বাংলাদেশে গত ২০ দিনে আরও ৫০ হাজার নাম যুক্ত হয়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের তালিকায়; প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার পাঁচ মাসের মাথায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আড়াই লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2020, 08:51 AM
Updated : 7 August 2020, 11:52 AM

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের টালিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যায় শীর্ষ দেশগুলোর তালিকায় ইতালিকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশ এখন রয়েছে ১৫ নম্বরে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২ হাজার ৮৫১ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৫২ হাজার ৫০২ জনে।

এ ভাইরাসে আক্রান্ত আরও ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৩ হাজার ৩৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৭৬০ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। তাতে সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল মোট ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৪ জনে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত বুলেটিনে যুক্ত হয়ে অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা শুক্রবার দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ। আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ছাড়িয়েছিল তিন মাস পর গত ১৮ জুন; তার ঠিক এক মাস পর ১৮ জুলাই তা ২ লাখ ছাড়ায়।

এর পরের নতুন ৫০ হাজার রোগী শনাক্তে সময় লাগল ২০ দিন। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি

সময় লাগল

১-১০০

১০০-১০০০

১০০০-১০০০০

১০০০০-৫০০০০

৫০০০০-১০০০০০

১০০০০০- ১৫০০০০

১৫০০০০-২০০০০০

২০০০০০- ২৫০০০০

২৮ দিন

৮ দিন

১৮ দিন

১৮ দিন

১৬ দিন

১৪ দিন

১৬ দিন

২০ দিন

প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

 

বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা শুক্রবার এক কোটি ৯১ লাখ ছাড়িয়েছে, মৃতের সংখ্যাও ৭ লাখ ১৫ হাজার পেরিয়েছে।

আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, দেশটিতে ৪৮ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৯ লাখের বেশি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত, সেখানে রোগীর সংখ্যা শুক্রবারই ২০ লাখ ছাড়িয়েছে।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের টালিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এখন বিশ্বে পঞ্চদশ; রোগীর সংখ্যায় ইতালিতে ছাড়িয়ে এখন পাকিস্তানের পরেই রয়েছে বাংলাদেশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩ অগাস্ট পর্যন্ত তথ্যের বরাত দিয়ে নাসিমা সুলতানা বুলেটিনে জানান, বাংলাদেশে প্রতি ১০ লাখে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের হার ১৪২১.৫।

দেশের বিভাগগুলোর মধ্যে ঢাকায় এই হার সবচেয়ে বেশি, প্রতি ১০ লাখে ৩৬৩৭। আর ঢাকা মহানগরীতে প্রতি ১০ লাখে ১৪৮২৪ দশমিক ২। 

এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১৪০ দশমিক ৭, রাজশাহীতে ৬০৮ দশমিক ৯, খুলনায় ৬৬৩ দশমিক ৫, বরিশালে ৬০৮ দশমিক ৮, ময়মনসিংহে ৩৫৩ দশমিক ৮, সিলেটে ৬৬৪ দশমিক ৩, রংপুরে ৩৪৭ দশমিক ৩।

নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৮৪টি ল্যাবে ১২ হাজার ৬৯৯ টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২ লাখ ৩৭ হাজার ৮২৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। পরীক্ষাগারের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে বনশ্রীর ফেমাস স্পেশালাইজড হাসপাতাল।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৫ শতাংশ, আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪০ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার তা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

বুলেটিনে জানানো হয়, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারী। ২৬ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মারা গেছেন। 

তাদের মধ্যে ১৩ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের এবং ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

এই ২৭ জনের মধ্যে একজনের বয়স ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ৪ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১২ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে।

 দেশে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত যে ৩ হাজার ৩৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের মধ্যে ৪৬ দশমিক ৯৮ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি।

এছাড়া ২৮ দশমিক ৫৯ শতাংশের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৬ দশমিক ৪২ শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ২ দশমিক ৬১ শতাংশের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে, এবং শূন্য দশমিক ৫৪ শতাংশের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।

 

পুরনো খবর