দোষ স্বীকার করলে সেদিনই তাদের শাস্তি ঘোষণা করবেন বিচারক, যদিও তার নজির বিরল। আর আসামিরা নির্দোষ দাবি করলে শুরু হবে বিচারের প্রক্রিয়া।
গোয়েন্দা পুলিশ বুধবার আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পরদিনই বৃহস্পতিবারই আলোচিত এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ ঠিক করে দেন ঢাকার মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারী।
আদালত পুলিশের সংশ্লিষ্ট কমর্কর্তা এসআই ফরিদ মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মুখ্য মহানগর হাকিম এ এম জুলফিকার হায়াত অভিযোগপত্রটি পযর্বেক্ষণ শেষে আমলে নিয়ে তা মহানগর হাকিম সরাফুজ্জামান আনছারীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু মনে করেন, এই মামলার তদন্তে এবং অভিযোগপত্র আমলে নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সময় নেওয়া দরকার ছিল।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখানে তো আরও কিছু বিষয় ছিল। ৩ জন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে, সেখানে তো আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তাদের আসামির তালিকায় রাখা হয়নি।
“বিষয়টা (তদন্ত ও অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানিতে) আর একটু সময় নিয়ে ভাবা উচিৎ ছিল। এত তাড়াহুড়ো করার দরকার ছিল না। যাই হোক আমি রোববার মামলার ডকেটটি হাতে নেব।”
জেকেজির বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছিল গত ২৩ জুন। গত ১৩ জুলাই এ মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ২২ দিনের মাথায় বুধবার তারা মামলার অভিযোগপত্র দেয়।
মামলাটি তদন্ত করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
অভিযোগপত্রে সাবরিনা ও আরিফকে জালিয়াতির ‘হোতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের সহযোগিতা করার।
অন্য আসামিরা হলেন- আরিফুলের বোন জেবুন্নেছা রিমা, সাবেক কর্মচারী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী তানজিলা পাটোয়ারী, জেকেজির কোঅর্ডিনেটর আবু সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির কর্মচারী বিপুল দাস ও শফিকুল ইসলাম রোমিও। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ার।
রাজধানীর কল্যাণপুরের কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরে তাদের কম্পিউটার থেকে চারজন প্রবাসীরসহ ৪৩ জনের নামে তৈরি করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সনদ পাওয়া যায়।
পরদিন কামাল হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন ওই দুইজনের বিরুদ্ধে। সরকারি নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ, কাজে অবহেলার মাধ্যমে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রামণ বিস্তারের ঝুঁকি তৈরি, করোনাভাইরাসের সনদ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় সেখানে।
হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল চৌধুরী, তার বোন জেবুন্নেছাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।
পরে ১২ জুলাই জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর সরকারি চাকরি থেকে বরখাস্ত হন তিনি।
১৩ জুলাই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর আরিফুল ও সাবরিনাকে দুই দফা রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। সাবরিনা ও আরিফুলকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
সাবরিনার মোবাইল সিম নিবন্ধিত এক রোগীর নামে https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/article1788465.bdnews