দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগের অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পদত্যাগী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
Published : 06 Aug 2020, 05:02 PM
দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে আলাদাভাবে দুই দিন কমিশনে তলব করে আজ পৃথক নোটিস পাঠানো হয়েছে।”
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে আবুল কালাম আজাদকে ১২ অগাস্ট কমিশনের জিজ্ঞাসাবাদে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আর করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার বিষয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে তাকে ১৩ অগাস্ট আবারও কমিশনের কার্যালয়ে যেতে বলা হয়েছে।
প্রনব বলেন, নিম্নমানের মাস্ক, পিপিই ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কেনাকাটায় দুর্নীতি অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে দুদক পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী নেতৃত্বে। তার স্বাক্ষরেই আবুল কালাম আজাদকে তলবের একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে।
রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির বিষয়ে অনুসন্ধানের নেতৃত্বে থাকা দুদক পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্যার স্বাক্ষরে অন্য নোটিসটি পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিকে।
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একের পর এক কেলেঙ্কারিতে সমালোচনার মুখে গত ২১ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পদত্যাগপত্র দেন ডা. আজাদ।
শুরুটা হয়েছিল চিকিৎসকদের নিম্ন মানের মাস্ক সরবরাহ দিয়ে। এরপর রিজেন্ট হাসপাতাল, জেকেজি হেলথ কেয়ারের জালিয়াতি ফাঁস হওয়ার পর তোপের মুখে পড়েন তিনি।
কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসায় গত ২১ মার্চ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তি হয়। ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তখনকার মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদসহ কয়েকজন সচিব উপস্থিত ছিলেন।
কিন্তু করোনাভাইরাসের পরীক্ষা না করে ভুয়া রিপোর্ট দেওয়া, সরকারের কাছে বিল দেওয়ার পর আবার রোগীর কাছ থেকেও অর্থ নেওয়াসহ নানা অনিয়মের খবর পেয়ে র্যাব গত ৭ ও ৮ জুলাই অভিযান চালিয়ে রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখা বন্ধ করে দেয়।
তখন জানা যায়, হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ ছিল না জেনেও রিজেন্টের সঙ্গে চুক্তি করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করার পর রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হওয়া চুক্তির নথিপত্র ইতোমধ্যে সংগ্রহ করেছে দুদক।
স্বাস্থ্যের আরও ৪ কর্মকর্তাকে তলব
করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ ও চিকিৎসার বিষয়ে মো. সাহেদের রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আরও চার কর্মকর্তা তলব করেছে দুদক।
আগামী ১২ অগাস্ট তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করে অনুসন্ধান কর্মকর্তা শেখ মো. ফানাফিল্যা বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের বরারব চিঠি পাঠিয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তা প্রনব কুমার জানিয়েছেন।
যাদেরকে তলব করা হয়েছে তারা হলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (ওএসডি) ডা. মো. আমিনুল হাসান, উপ-পরিচালক মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক ডা. মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা ডা. মো. দিদারুল ইসলাম।
তাদেরকে তলব করে অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, “অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার অধীনস্থ কর্মকর্তার (উল্লেখিত চারজন) বক্তব্য শ্রবণ ও গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন।”
এসব কর্মকর্তাকে দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অনুসন্ধান টিমের কাছে বক্তব্য দিয়ে অনুসন্ধান কাজে সহযোগিতা করতে অনুরোধ করা হয়।