দোকানপাট খোলা রাখার সময় বাড়ল

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে হাটবাজার, দোকান-পাট ও শপিংমল খোলা রাখার সময় এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2020, 07:42 AM
Updated : 3 August 2020, 09:13 AM

এখন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা যাবে, যা এতদিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ছিল।

তবে মহামারীর এই সঙ্কটের মধ্যে যেভাবে সীমিত আকারে অফিস চলছে, তা আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আর রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যেতে সবাইকে নিষেধ করা হয়েছে।

সোমবার এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধ এবং পরিস্থিতি উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার শর্তসাপেক্ষে সার্বিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার যে নির্দেশনা দিয়েছিল এবং জনসাধারণের চলাচলে যে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছিল, তা ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটির দিনও এর আওতায় পড়বে।

“হাটবাজার, দোকান-পাট ও শপিংমলে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে প্রতিপালন করতে হবে। শপিংমলে প্রবেশমুখে তাপমাত্রা পরিমাপক যন্ত্র এবং হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহনগুলোকে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

“হাটবাজার, দোকান-পাট ও শপিংমল আকশ্যিকভাবে রাত ৮টার মধ্যে বন্ধ করতে হবে। পণ্য বা খাদ্য কিনতে জনসাধারণকে ই-কমার্স সাইট ব্যবহারে উৎসাহিত করতে হবে।”

সরকার গত ১ জুলাই থেকে ৩ অগাস্ট পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছিল। তার আগে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখা যেত।

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ২৬ মার্চ থেকে চলা টানা ৬৬ দিনের লকডাউন ওঠার পর গত ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে অফিস চালু হয়। তখন থেকে বিধি-নিষেধগুলো ক্রমান্বয়ে শিথিল করছে সরকার। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

কোরবানির ঈদে তিন দিন ছুটির পর সোমবার থেকে আগের নিয়মেই সরকারি দপ্তরগুলোতে কাজ শুরু হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আগের মতই ঝুঁকিপূর্ণ, অসুস্থ এবং সন্তান সম্ভবা নারীদের কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। একসঙ্গে ২৫ শতাংশের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী অফিসে উপস্থিত থাকবেন না।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “সকলেই যেন কর্মহীন হয়ে না পড়েন এবং আর্থ-সামজিক অবস্থা ঠিক রাখার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু রাখতে হবে। দেশ যাতে স্বাভাবিকভাবে থাকে স্বাস্থবিধি মেনে সতর্কতার সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে।”

সব সচিবদের কাছে পাঠানো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় ক্রয়-বিক্রয়, কর্মস্থলে যাতায়াত, ওষুধ কেনা, চিকিৎসা সেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার) বাড়ির বাইরে আসা যাবে না। অন্যথায় আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

“সরকারি, স্বায়ত্ত্বশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প কারখানা ও সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে জারি করা স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তান সম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন।”

গণপরিবহনসহ সব ধরনের যানবাহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে পারবে।

সব ধরনের সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত ও অনুষ্ঠান আয়োজনে যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, তা আগামী ৩১ অগাস্ট পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান আয়োজনে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

“ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা প্রতিপালন করে মসজিদে জামায়াতে নামাজ আদায় ও অন্যান্য উপাসনালয়ে প্রার্থনা করা যাবে।”

সরকার বলছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা জোনভিত্তিক কৌশল বা গাইডলাইন অনুসরণ করে অধিকতর সংক্রমিত এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সেখানে সর্বসাধারণের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ বা প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

“স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ বিষয়ে সুস্পষ্ট অনুমোদন ও নির্দেশনা দেবে। সিটি করপোরেশন এলাকায় সিটি করপোরেশন এবং অন্যান্য এলাকায় জেলা প্রশাসন এ সংক্রান্ত কার্যাবলির সার্বিক সমন্বয় করবে।”

জনসাধারণকে কোভিড-১৯ এর বিস্তার রোধে সচেতন করতে স্থানীয় সরকার বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগসহ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে প্রচার চালাতে বলা হয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে।

পুরনো খবর