করোনাভাইরাস: আরও ৩০ মৃত্যু, শনাক্ত ১৩৫৬

দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৫৬ জন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2020, 08:47 AM
Updated : 3 August 2020, 11:13 AM

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা সোমবার নিয়মিত বুলেটিনে দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির এই সবশেষ তথ্য তুলে ধরেন।

এদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ১ হাজার ৩৫৬ জনকে নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৪২ হাজার ১০২ জন হল।

আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৩০ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মৃতের মোট সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ১৮৪ জনে।

আইইডিসিআরের ‘অনুমিত’ হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৬৬ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত একদিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯০৫ জন।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ, তা দুই লাখ পেরিয়ে যায় ১৮ জুলাই। এর মধ্যে ২ জুলাই ৪ হাজার ১৯ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ শনাক্ত।

প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই সেই সংখ্যা তিন হাজার স্পর্শ করে। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয় বুলেটিনে, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু।

সোমবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৭৭টি ল্যাবে ৪ হাজার ২৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।

২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩১ দশমিক ৯১ শতাংশ, আর এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২৮ শতাংশ।

শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার তা ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।

এর আগে গত শনিবার কোরবানির ঈদের দিন করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসায় এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত আড়াই মাসে প্রথমবারের মত হাজারের নিচে নেমে আসে।

শনিবার দেশে বিভিন্ন ল্যাবে ৩ হাজার ৬৮৪টি নমুনা পরীক্ষা হয়, তাতে ৮৮৬ জনের দেহে সংক্রমণ ধরা পড়ে।

সর্বশেষ এক দিনে এর চেয়ে কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল গত ২৬ এপ্রিল। সেদিন ৩ হাজার ৪৭৬টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল।

আর এক দিনে রোববারের চেয়ে কম রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ৯ মে, সেদিন ৬৩৬ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে।

রোববার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কিছুটা বাড়ায় এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও আবার বেড়ে হাজারের উপরে উঠেছে।

করোনাভাইরাসের লক্ষণ-উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ নমুনা পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে নমুনা পরীক্ষা করাতে জনসাধারণকে অনুরোধ করেছেন নাসিমা সুলতানা।

 

অধ্যাপক নাসিমা বলেন, গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৫ জন পুরুষ এবং ৫ জন নারী। ২৭ জন হাসপাতালে এবং ৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন।

মৃত ৩০ জনের মধ্যে ১ জনের বয়স ৯০ বছরের বেশি। এছাড়া ১ জনের বয়স ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে, ৫ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ১৪ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

বুলেটিনে তথ্য বিশ্লেষণ শেষে নাসিমা সুলতানা নমুনা পরীক্ষায় গুরুত্বারোপ করে বলেন, “আপনাদের বিনীতভাবে অনুরোধ করি, আপনারা নমুনা পরীক্ষা করতে দিন। নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা রোগ প্রতিরোধ করতে পারব। রোগ সনাক্তকরণ প্রতিরোধের প্রধান উপায়। রোগ সনাক্ত করতে আমাদের সহায়তা করুন।”

 

পুরনো খবর