তার অভিযোগ, ‘গরিবের ভাগের মাংস আত্মসাতের প্রতিবাদ করায়’ ঈদের দিন শনিবার সন্ধ্যায় মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়ি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আজিজুর রহমান ও তার লোকজন ওই হামলা চালায়।
হামলায় আহত ইমরানের মাথায় পাঁচটি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার ছোট ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসাইনও মাথায় আঘাত পেয়ে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছেন।
এ ঘটনায় আজিজুর রহমান (৫৭), তার ছেলে সাগর হোসেন (২২) এবং ওই ইউনিয়নের গাড়াপোড়া গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেনের (৩৫) নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৬-৭ জনের বিরুদ্ধ মহেশপুর থানায় মামলা করেছেন ইমরান।
অন্যদিকে মাংস আত্মসাৎ ও হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য আজিজ বলেছেন, ইমরানের বাবাই তার আত্মীয়ের কথা বলে ‘মাংস নেন’। স্থানীয়রা এর প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে ‘মারামারি’ হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে সদ্য মাস্টার্স শেষ করা ইমরান ইউএনবির বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। মহামারীর এই সময়ে তিনি মহেশপুরে তার বাড়িতেই থাকছেন।
তিনি বলেন, ঈদের দিন যারা কোরবানি দিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে গরিবের ভাগের অংশ সংগ্রহ করা হয় এলাকারে অসহায় ও দুস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য।
ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান ও তার ছেলে হামলায় সরাসরি অংশ নেন বলে অভিযোগ করেন ইমরান। রোববার বিকালে তিনি মহেশপুর থানায় মামলা করেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফোন করলে ইউপি সদস্য আজিজুর রহমান প্রথমে স্থানীয় প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
পরে অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গরিবের মাংস আমি আত্মসাৎ করব! অসম্ভব ব্যাপার। … ওই মাংস আমি নিজের জন্য নিইনি। বিতরণ শেষে ১৩ প্যাকেট থেকে যায়। আমরা সেগুলো অন্য গ্রামে গরিবদের বিতরণের জন্য নিয়ে যাই।
“পথে ইমরানের বাবা তার আত্মীয়ের কথা বলে দুই প্যাকেট মাংস নিয়ে নেন। পরে বাক্স থেকে আরও এক প্যাকেট নিজের হাতে নিয়ে যান। লোকজন এটার প্রতিবাদ করলে তিনি গরিবের হক মাটিতে ফেলে দেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে।”
মহেশপুর থানার এসআই সঞ্জয় মণ্ডল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি, থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখন তদন্তের কাজ চলছে।"
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এ ঘটনায় ‘তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ’ জানিয়েছে। ইউপি সদস্য আজিজুর এবং তার সহযোগীদের আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন সমিতির সভাপতি রায়হানুল ইসলাম।